Blog

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটার হতে যা যা জানতেই হবে

Digital Marketing

একটি কথা আছে প্রচারেই প্রসার। আর এই কথাটি ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। কোন ব্যবসা কতটা উন্নতি করবে সেটা নির্ভর করে সেটার মার্কেটিং বা প্রচারের উপর। সময়ের সাথে সাথে প্রচারে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সেই পুরানো মার্কেটিং এখন আর মানুষকে সেই ভাবে টানে না। তাই এখন সবাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে বেশি ঝুঁকছে। অনলাইন আর অফলাইন যে কোন ব্যবসা হোক অল্প সময়ে অনেক মানুষের কাছে সেই পণ্য পৌঁছে দিতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। চলুন তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং হলো যোগাযোগ মাধ্যমের সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে ইন্টারনেটের সুবিধা ব্যবহার করে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানো। সুতরাং বলা যায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আধুনিক উপায়ে যে প্রচার চালানো হয় তাই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং। আমরা টেলিভিশনে যে বিজ্ঞাপন দেখি, ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেখি , ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখার সময় আমাদের সামনে যে অ্যাড চলে আসে এই সব কিছু ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল উপায়ে এই সকল মার্কেটিং করা যায় বলে আমাদের কাছে এই বিজ্ঞাপন চলে আসে। তাহলে বুঝতেই পারছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বর্তমান সময়ে কেমন।

ডিজিটাল মার্কেটিং বনাম অ্যানালগ মার্কেটিং দুটি কি একই রকম?

ইন্টারনেট বা ডিজিটাল ডিভাইসগুলা আসার আগে যেভাবে মার্কেটিং করা হত সেটি ছিল অ্যানালগ মার্কেটিং পদ্ধতি। অনেক আগে যখন কোন নতুন ছবি ছবি মুক্তি পেত তখন সেটার জন্য অনেক পোষ্টার ছাপানো হত এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে সেই পোষ্টার লাগিয়ে দিত এতে মানুষ জানতে পারত এই নতুন ছবি সম্পর্কে। খবরের কাগজেও এর পোস্টার ছাপা হচ্ছে। আপনি যদি শহরের মধ্যে লোকাল বাস দিয়ে যাতায়াত করেন তাহলে বাসের মধ্যে জানার মধ্যে দেখতে পারবেন ছোট ছোট পোস্টার লাগিয়ে দেয়া আছে। রাস্তার পাশে কেউ হত আপনার হাতে ছোট একটি লিফলেট ধরিয়ে দিচ্ছে। এই সম্পর্ক ধরে নিজের প্রচারণার জন্য একটি কার্ড বা লিফলেট সবাইকে দেয়া হয়, যেখানে ব্যক্তির পরিচয় এবং তার ঠিকানা দেয়া থাকে। এই সব কিছু অ্যানালগ মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত। অ্যানালগ মার্কেটিং সিস্টেম ওয়ান টু ওয়ান কালেকশন এর মত। ডিজিটাল মার্কেটিং এবং অ্যানালগ মার্কেটিং উভয়ই মার্কেটিং এর একই লক্ষ্য লক্ষ্য করে তবে মার্কেটিং কৌশল অনেক ভিন্ন।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে ডিজিটাল মার্কেটিং কি অ্যানালগ মার্কেটিং কে সরিয়ে দিয়েছে? এর উত্তর হলো, না। ডিজিটাল মার্কেটিং এসে অ্যানালগ মার্কেটিং এর কাজটি আরও সহজ করে দিয়েছে। আগে যেখানে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজের প্রচারণা চালাতে হতো কিংবা লোকজনের কাছে নিজের পরিচয়ের একটি কার্ড বিলি করতে হতো প্রচারণার জন্য, সেখানে আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো একটি পোস্ট কিংবা কোনো প্রকার অ্যাডভার্টাইজম্যান্টের মাধ্যমেই নিজের পরিচয় জানান দেয়া যায়। বাংলাদেশে এখনও অনেক জায়গায় সাধারণ বিলবোর্ডের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে দেখা যায়। এটি কিন্তু এক প্রকার অ্যানালগ মার্কেটিং। দেশের বাহিরে কিন্তু বিলবোর্ডের এর মাধ্যমে মার্কেটিং করা হয় কিন্তু সেখানে রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া। তারা তাদের প্রায় সবকটি বিলবোর্ডে ডিসপ্লে স্ক্রিন ব্যবহার করে, কেননা তারা ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বুঝে।

বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা সেখানে কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিভিন্ন অকেশনের বড় বড় কোম্পানির মার্কেটিং করা হয়। মার্কেটিং সফল হওয়ার পিছনে মূলমন্ত্র হলো আপনি দর্শককে কতটুকু আকৃষ্ট করতে পারছেন। আপনার পণ্য বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন যতো বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হবে, দর্শক ততো বেশি আকৃষ্ট হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কখন, কেন প্রয়োজন?

মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষকে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানানো তাদের আকৃষ্ট করা সেটা যে ভাবে হোক না কেন। এখন ডিজিটাল মার্কেটিং কি সব জাগায় করতে হবে? উওর হল না। সব জাগায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজন নেই। ধরুন, আপনি এমন একটা জাগায় মার্কেটিং এর জন্য বিলবোর্ড লাগালেন যার আশেপাশে অন্য কোন বিলবোর্ড নেই। সেখানে শুধু আপনার বিলবোর্ড টা সবার চোখে পরবে সেখানে আপনার ডিজিটাল বিলবোর্ড এর কোন প্রয়োজন নেই। আপনি সেখানে অ্যানালগ ভাবে মার্কেটিং করতে পারেন। কারণ আপনার মার্কেটিং উদ্দেশ্য মানুষকে আকৃষ্ট করা। সেখানে সাধারণ বিলবোর্ড সবার চোখে পরবে। কিন্তু যেখানে অ্যানালগ মার্কেটিং এর ছড়াছড়ি আশেপাশে নানা রকম মার্কেটিং বিলবোর্ড রয়েছে সেখানে মানুষেকে আকৃষ্ট করতে আপনাকে অন্য সবার থেকে আলদা ভাবে মার্কেটিং করতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং-এর বিভিন্ন পদ্ধতি

ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। অনেক উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়। চলুন এবার সেই পদ্ধতি গুলা জেনে নেয়া যাক।

(SEO) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে মূলত Google, Bing এই সাইটগুলো যেখানে মূলত মানুষ কিছু খুঁজে বের করার জন্য সার্চ করে। মূলত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের কিছু নিয়মকানুন যা অনুসরণ বা প্রয়োগ করা হলে সার্চ ইঞ্জিন কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং র‍্যাঙ্ক করে থাকে। আরও একটু সহজ করে বলি ধরুন, আপনি একটি অনলাইন বইয়ের দোকান চালু করতে চাচ্ছেন। মানুষজন বই অর্ডার করলে আপনার দোকান থেকে সেটি হোম ডেলিভারি দেয়া হবে। এখন কেউ আপনার দোকানের ব্যাপারে জানে না। কারো যদি অনলাইনে বই কেনার দরকার পরে, তখন সে গুগলে সার্চ দিবে “Online Book Shops in Bangladesh.” গুগল সুন্দর মতো বর্তমান বুকশপগুলোর ব্যাপারে তাকে বলে দিবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ভদ্রলোক সেই শপগুলোর ব্যাপারেই জানবে যেগুলো গুগলের প্রথম পেইজে আছে। এখন নতুন দোকানের মালিক হিসেবে গুগল আপনাকে নাও চিনতে পারে। তাই গুগল হয়তো আপনাকে প্রথম পেইজে দেখালো না। এজন্য ওয়েবসাইট ডেভলপ করার সময় বেশ কিছু কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। SEO সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ভাবে জানতে গেলে আপনি আরও অনেক মজার তথ্য জানতে পারবেন।

ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

বিশ্বে মোট ইন্টানেট ব্যবহারকারীদের ৭৫% কোন না কোন সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত। বর্তমান বিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক অনেক বেশি জনপ্রিয়। কারণ দিনের একটা বড় অংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটিয়ে দেয়। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সমাজে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি বড় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে, তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক একটি বড় মঞ্চ সকলের কাছে। কোনো ইভেন্ট কিংবা কোনো পণ্য বিক্রির প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এখন সকলেই ব্যবহার করছে। পোস্ট শেয়ারিং এবং বুস্টিং এর মাধ্যমে সহজেই মানুষের কাছে আপনার প্রচারণা চালাতে চালাতে পারেন। আর আপনি যদি একজন ফেসবুক মার্কেটিং এক্সপার্ট হতে চান, তাহলে জয়েন করতে পারেন আমাদের বেস্টসেলিং এই ফেসবুক মার্কেটিং কোর্সে: https://www.msbacademy.com/course/facebook-and-messenger-marketing

কে কি করছে, কি খাচ্ছে, কোথায় ঘুরতে যাচ্ছে সব কিছু এখন মানুষ ফেসবুকে পোস্ট করে শর্ট ভিডিও করে এবং স্টোরি তে আপলোড দিচ্ছে। আপনি একটু খেয়াল করলে দেখতে পারবেন আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে যা আছে বা আপনি যাদের পেজ লাইক ফলো দিয়ে রেখেছেন তারা তাদের স্টোরিতে প্রতি ঘণ্টায় কিছু না কিছু আপলোড দিচ্ছে শেয়ার করছে। স্টোরি শেয়ার করার মধ্যে দিয়ে সহজে মানুষকে আকৃষ্ট করা যায়।

এছাড়াও ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করার একটা অপশন রয়েছে যার সুবিধা মার্কেটররা অনেক বেশি নিচ্ছে। লাইভে এসে পণ্য সম্পর্কে বলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে আকর্ষণীয় করে সুন্দর ভিডিও করে সেটা ফেসবুকে শেয়ার করে নিজের পণ্য বা সেবা সহজে মানুষে মধ্যে তুলে ধরা যায়। এছাড়া ভিডিও আপলোড করে In-stream Ad এর মাধ্যমে এখন অনেকেই ফেসবুক থেকে ইনকাম করছে।

ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং প্রক্রিয়া। ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে একটি সাজানো আর্টিকেল বা কন্টেন্ট এর মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরে, তাকে ওই পন্য ক্রয়ে আগ্রহী করে তোলা। এর মাধ্যমে অল্প সময়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। স্মার্ট ইমেইল প্রেরণের মাধ্যমে ব্যবসায় লাভবান হওয়া সম্ভব ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এটি অনেকটা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মত তবে কিছুটা আলাদা। ধরুন আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে সেখানে আপনি টেকনোলজি এবং ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন এবং প্রতিটা ভিডিও শেষে আপনি এমএসবি একাডেমীর কোর্সের ব্যাপারে সবাইকে বলে দেন। এখানে আপনি এমএসবি একাডেমীর অ্যাফিলিয়েট হিসেবে কাজ করছেন। এর বিনিময়ে এমএসবি একাডেমী আপনাকে একটি সম্মানি প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ, আপনাই আপনার কাজের মাধ্যমে সবাইকে এম এসবি একাডেমী ব্যাপারে বলছেন। অনেক সময় অ্যাফিলিয়েটদের জন্য আলাদা প্রোমো কোড দেয়া হয়, যার মাধ্যমে ক্রেতারা কোনো পণ্যের উপর বিশেষ ছাড় পেতে পারে। এবং আপনার দেয়া অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক ক্লিক করে কেউ ক্রয় করলে আপনিও এক্সট্রা একটা কমিশন পেয়ে থাকেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয়।

ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

ফেসবুক, ইউটিউবে যেমন ছবি বা ভিডিও শেয়ার করে যে কোন পণ্যের প্রোমোশন বা মার্কেটিং করা যায়, এখন তার সাথে যোগ হয়েছে ইনস্টাগ্রাম। ফেসবুক এবং ইউটিউব এর মত আপনি চাইলে এখন আপনার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল দিয়েও মার্কেটিং করতে পারবেন। এই প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে দেশি বিদেশি অনেক ব্র্যান্ড এখন তাদের প্রমোশনাল কাজ চালাচ্ছে।

ইন্সটাগ্রাম মূলত Photo, Video শেয়ারিং আপ্লিকেশন এবং সোশ্যাল প্লাটফর্ম। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ইন্সটাগ্রাম একটি Mobile Focused সোশ্যাল প্লাটফর্ম। মানে ম্যাক্সিমাম ব্যাবহারকারী ইন্সটাগ্রাম মূলত তাদের মোবাইল ফোনেই ব্যবহার করে থাকে। আর যেহেতু এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল তাই ফেসবুক এর মত ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকারী।

কন্টেন্ট মার্কেটিং -এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

এখন প্রায়ই দেখা যায় যে, বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো অনলাইন পত্রিকায় কিংবা ব্লগ সাইটে সেই প্রতিষ্ঠানের নামে প্রোমোশনাল ব্লগ লেখা হচ্ছে। সেই ব্লগ পড়ে মানুষজন সেই প্রতিষ্ঠানে কী রকম সেবা দেয় তা জানতে পারছে। এগুলো হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। নিজের প্রতিষ্ঠানের সেবার ব্যাপারে মানুষজনকে জানানোর জন্য এরকম মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী। নিজে লিখতে না পারলে কোনো পেশাদারী ব্লগ লেখককে দিয়েও নিজেদের ব্যাপারে কন্টেন্ট লিখিয়ে নেয়া যায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)

ধারণা করা হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে এক সময় পুরো পৃথিবী ছেয়ে যাবে। মানুষের কাজ তখন প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। বর্তমান সময়ে মার্কেটিং-এর বাজারে একটি বড় অংশ দখল করে নিয়েছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI, যা ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সামনে আরও বাড়বে। উদারহণ হিসেবে ফেসবুকের মেসেঞ্জার বটের কথাই ধরা যাক কোনো সেলিং কোম্পানিকে যদি মেসেঞ্জারে নক করেন, তাহলে তারা প্রায় সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে থাকে। আর আপনার চাহিদা অনুযায়ী যদি তাদের কাছে পণ্য চান, তাহলে আপনার পছন্দমতো পণ্যও তারা দেখাতে পারে। এমনকি আপনার কেমন চাহিদা তার উপর ভিত্তি করে তারা পরবর্তীতেও আপনার সামনে তাদের পণ্য প্রদর্শন করে।

চ্যাটবট (Chatbot)

বর্তমানে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো এই চ্যাটবট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত এই চ্যাটবট ব্যবহারকারীর যেকোনো চাহিদা সহজেই অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করে থাকে। চ্যাটবটস হলো একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার, যা মানুষের সাথে ইন্টারঅ্যাকশন করে। এটি বিভিন্ন টেকনোলজি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট উত্তর বা কাজ করতে সক্ষম হয়, যা ব্যবহারকারীদের জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেয় ও নির্দিষ্ট কাজগুলি করতে সক্ষম হয়। চ্যাটবটস সাধারণত ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় এবং আধুনিক একটি কমিউনিকেশন প্রযুক্তি হিসাবে চ্যাটবট বেশ কার্যকারী।

digital marketing

উপরের এই পদ্ধতিগুলো বর্তমান সময়ে প্রচলিত ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেন্ড। আশা করি উপরের এতটুকু পড়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যেম সম্পর্কে আইডিয়া পেয়েছেন। এখন অনেক ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে হয়ত এই সকল সেক্টরে সঠিক ভাবে মার্কেটিং করা সম্ভব হবে না সবার জন্য। তাই এখন কিছু টিপস অ্যান্ড ট্যাক্টিকস জানব যা যেকোনো ছোট-খাটো ব্যবসায় মার্কেটিং-এর কাজে ব্যবহার করা যাবে। এই ট্যাক্টিকসগুলো ব্যবহার করে সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করাও সম্ভব।

১) ট্রেন্ড এর সাথে তাল মিলিয়ে পোস্ট করা

এখন ভাইরাল এর সময়। একটা নিদিষ্ট সময় মানুষ একটা নিদিষ্ট টপিক নিয়ে বেশ মাতামাতি করে। একটু অন্য রকম কোন পোস্ট হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার হিড়িক পড়ে যায়। মার্কেটিং-এর জন্য আপনি এই জিনিসটি কাজে লাগাতে কাজে লাগাতে পারেন। কারণ মানুষ এই সব বিষয় নিয়ে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করে বেশ মজা পায়। এভাবে মজার ছলেই চাইলে নিজেদের মার্কেটিং করে ফেলা যায়।

২) সহজে ব্যবহার যোগ্য ওয়েবসাইট তৈরি করা

বর্তমানে প্রায় ছোট বড় সকল ব্যবসার জন্য একটি সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। আপনি যখন আপনার ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তখন অবশই খেয়াল রাখতে হবে আপনার ওয়েবসাইটি যেন সহজে ব্যবহার যোগ্য হয়। অর্থাৎ মোবাইল এবং ডেস্কটপ দুই ভাবে যেন সহজে এক্সেস করতে পারে। বেশিরভাগ গ্রাহক এখন মোবাইল ফোন ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এখন আপনি যদি এমন ওয়েবসাইট তৈরি করেন সেখানে শুধু ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দিয়ে এক্সেস করা যাবে তাহলে কিন্তু মোবাইল ব্যবহারকারী গ্রাহকদের অনেক বড় একটা অংশ হারিয়ে আপনি হারিয়ে ফেলছেন। সবচেয়ে ভাল হবে যদি আপনার ওয়েবসাইটের কোন মোবাইল অ্যাপ থাকে। তাই চেষ্টা করতে হবে ওয়েবসাইটের পাশাপাশি সেই ওয়েবসাইটের মোবাইল অ্যাপ তৈরি করার।

৩) সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময় আপডেট থাকুন

বর্তমানে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় দিয়ে থাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে সর্বদা আপডেট থাকুন। প্রতিনিয়ত নিজেদের কাজ এবং নিজেদের আপডেট সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন পোস্ট করুন। এটি করতে কিন্তু আপনার টাকা পয়সা লাগবে না। সোশ্যাল মিডিয়াতে আপডেট থাকলে নিজেরাও বুঝতে পারবেন কি হালচাল চলছে আশেপাশের সব কিছুর।

৪) সহজ কাস্টমার সাপোর্ট এর ব্যবস্থা রাখুন

কাস্টমার বা গ্রাহক কিন্তু সব কিছুর মূল হাতিয়ার। যেকোনো ব্যাপারে গ্রাহকদের মতামতে গুরুত্ব দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাস্টমার যে সহজে যোগাযোগ করতে পারে এবং তাদের মতামত শেয়ার করতে পারে তাই ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় এই বিষটি মাথায় রাখতে হবে। এই জন্য ওয়েবসাইটে একটি মেসেঞ্জার বটেরও ব্যবস্থা করতে পারেন।

৫) যতটা সম্ভব ইমেইল কালেকশন করুন

অন্য সকল মার্কেটিং এর তুলনায় ইমেইল মার্কেটিং অনেক সহজ এবং কম খরচে করা যায়। নতুন কোন পণ্য বা সার্ভিস সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানোর জন্য ইমেইল মার্কেটিং বেশ কার্যকারী। আপনি যখন আপনার গ্রাহকদের সুন্দর করে একটি ইমেইল পাঠিয়ে আপনার নতুন সেবা সম্পর্কে জানাবেন তখন গ্রাহক এবং আপনার মধ্যে একধনের আন্তরিকতা সৃষ্টি হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং বিশাল একটি সেক্টর। এই সেক্টরে যদি আপনি এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে আশা করা যায় যে কোন ব্যবসা করে আপনি সফল হতে পারবেন। আপনি যখন সঠিক ভাবে আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন মানুষের কাছে আপনার সেবা বা পণ্যর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে পারবেন তখন ধীরে ধীরে আপনার আলাদা গ্রাহক তৈরি হতে থাকবে।

আর আপনি ১টি মাত্র কোর্স করে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হতে চাইলে আমাদের All in One Digital Marketing কোর্সটি হবে একদমই পারফেক্ট একটি কোর্স। ব্লগিং, SEO, অ্যাফিলিয়েট, ফেসবুক মার্কেটিং, ইউটিউব, কুপন বিজনেস থেকে শুরু করে ১৪টির বেশি মার্কেটিং সেক্টরে এক্সপার্ট হয়ে যাবেন, যা আপনাকে প্রতি মাসে হাজার ডলার+ ইনকাম জেনারেটে সাহায্য করবে।

Comments

  • User Avatar
    rana02
    May 9, 2023

    ব্লগটি পরে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সটি করার প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেলে। চমৎকার লিখেছেন। আসলেই আমাদের সবার এখন ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানা উচিৎ।

  • User Avatar
    hridoy26
    May 9, 2023

    ধন্যবাদ এত সুন্দর করে সব কিছু বুঝিয়ে বলার জন্য। মাসুক ভাইয়ের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সটি করলে কি আমি সব কিছু সেখানে শিখতে পারব?

    • User Avatar

      অবশ্যই। আমার এই All in One ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সটি করে আপনার আলাদাভাবে আলাদা কোন টপিকের আর কোন মার্কেটিং কোর্স করতে হবে না ইনশাআল্লাহ। Check the course link for details: https://www.msbacademy.com/course/digital-marketing-masterclass/

  • User Avatar
    atik27
    May 9, 2023

    Very informative blog. thanks

Leave a Reply