বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ডিজিটাল যুগে, ইনস্টাগ্রাম কেবল একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একটি শক্তিশালী মার্কেটিং টুল হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বজুড়ে ২.৪ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী এবং লাখ লাখ এনগেজমেন্টের মাধ্যমে এটি ব্র্যান্ড বা ব্যবসাগুলোর জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে। বর্তমানে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন এর বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে এই প্ল্যাটফর্মে। মোবাইলে সহজে ব্যবহার করা যায় বলে দিন দিন এর ব্যবহারকারী এবং জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। একটা সময় শুধু ছবি শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হলেও বর্তমানে শুধু ছবি পোস্ট করাই নয়, সঠিক কৌশল ব্যবহার করে ইনস্টাগ্রাম এর মাধ্যমে এখন চাইলে যে কেউ তার পণ্য, সেবা এবং ব্যবসার ব্র্যান্ড মার্কেটিং করতে পারবে।
আপনার পণ্যের বিক্রি বাড়ানো, কাস্টমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং বর্তমান প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চাইলে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ইনস্টাগ্রাম আইডি ওপেন করেলেই ত আর সফল হয়া যাবে না। সঠিক এবং কার্যকরী কিছু টিপস মেনে কাজ করতে হবে। ঠিক তেমন ১০টি টিপস নিয়ে এই ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে।
ইনস্টাগ্রাম কি?
ইনস্টাগ্রাম (Instagram) একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যা ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করার জন্য পরিচিত। এটি মূলত একটি মোবাইল-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত, পছন্দের বিষয়বস্তু, এবং সৃজনশীল কাজ শেয়ার করতে পারে। এটি সম্পর্ক তৈরি করার, বিনোদন দেওয়ার এবং বিশ্বব্যাপী মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের একটি দারুণ মাধ্যম। ইনস্টাগ্রামের সূচনা হয় ২০১০ সালে। এটি চালু করেছিলেন কেভিন সিসট্রোম (Kevin Systrom) এবং মাইক ক্রিগার (Mike Krieger)।
প্রথম দিকে এটি শুধুমাত্র একটি ছবি শেয়ারিং অ্যাপ ছিল, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ছবি আপলোড করে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার ব্যবহার করতে পারতেন এবং বন্ধুদের সঙ্গে তা শেয়ার করতে পারতেন। ২০১২ সালে ফেসবুক (বর্তমানে মেটা) ইনস্টাগ্রামকে ১ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয়। বর্তমানে এটি ফেসবুকের মতোই মেটা (Meta) কোম্পানির অধীন পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন এর বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে এই প্ল্যাটফর্মে।
ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কি?
ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং হচ্ছে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে যেকোনো পণ্য, সেবা, সার্ভিস অথবা প্রতিষ্ঠানের প্রচার করা। ইনস্টাগ্রাম অনেক শক্তিশালী এবং জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় আপনি খুব সহজেই আপনার পণ্যকে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছতে পারবেন। পণ্যের প্রচার করার সাথে সাথে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার সম্পর্কে অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধি করতে পারবেন। যাতে করে কাস্টমারের সাথে আপনার সু-সম্পর্ক স্থাপন হবে এবং আপনার সেলস অনেক বৃদ্ধি পাবে।
আর আপনাদের জন্য Good News হচ্ছে, মোবাইল ফোন দিয়ে যদি ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রডাক্ট বা সার্ভিস সেল, CPA মার্কেটিং, অ্যাকাউন্ট বিক্রি ইত্যাদি আরও বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব এবং এর উপর কমপ্লিট একটি কোর্স MSB Academy-তে পাবলিশ হয়ে গেছে। কিছু নিয়ম কানুন এবং কিছু সিক্রেট ফলো করে প্রতি মাসে কিভাবে ২০,০০০-৪০,০০০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায় তার প্রুভেন টেকনিক এই কোর্সে শেয়ার করা হবে।
Instagram Marketing Masterclass কোর্সটিতে একবার জয়েন করলেই পাবেন লাইফটাইমের অ্যাক্সেস অ্যান্ড ইন্সট্রাক্টর সাপোর্ট। তাই যারা মোবাইল দিয়ে কাজ করে প্রতি মাসে Good Amount of Money ইনকাম করতে চান, তারা জয়েন করে ফেলতে পারেন কোর্সটিতে।
১০টি পাওয়ারফুল Instagram Marketing টিপস
ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনি যদি কিছু টিপস মাথায় রেখে মার্কেটিং এর কাজ শুরু করেন, তাহলে আপনি খুব সহজেই টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। ইনস্টাগ্রামে আপনার ব্যবসা সফল করার জন্য এই ১০টি পাওয়ারফুল কৌশল নিশ্চিতভাবেই আপনাকে এবং আপনার বিজনেসকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
১) বিজনেস অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
ইনস্টাগ্রামে সফলতা পেতে প্রথম ধাপ হলো একটি বিজনেস প্রোফাইল সেটআপ করা। কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ? বিজনেস প্রোফাইল বিশেষ কিছু সুবিধা দেয়, যেমন ইনসাইট ডেটা দেখা (ইনস্টাগ্রাম অ্যানালিটিক্স), প্রোমোশন পরিচালনা এবং “Contact” বোতাম যোগ করা।এটি ব্র্যান্ডকে আরও পেশাদার এবং বিশ্বস্ত করে তোলে। বিজনেস প্রোফাইল ব্যবহার করে সহজেই স্পন্সরশিপ বা ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করে ইনকাম করা যায়।
ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং করার মাথায় ভাবনা আসলে সবার আগে যা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে সেটা হলো, আপনার যেনো একটা Instagram Business Account থাকা। আপনার Current profile থেকে সুইচ করে Business account এ প্রবেশ করতে পারবেন খুব সহজে। ইন্সটাগ্রাম বিজনেস প্রোফাইল আপগ্রেড করার প্রক্রিয়া হল বেশ সহজ এবং এটি আপনাকে আপনার মার্কেটিং কৌশল আরও কার্যকরীভাবে বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করে। নিচে পার্সোনাল প্রোফাইল আপগ্রেড করে কিভাবে বিজনেস প্রোফাইল করবেন করার জন্য বিস্তারিত পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো-
Step 1) ইন্সটাগ্রাম অ্যাপ খুলুন
প্রথমে আপনার স্মার্টফোনে ইন্সটাগ্রাম অ্যাপটি খোলে কনট্রোলিং করুন।
Step 2) আপনার প্রোফাইলে যান
আপনার প্রোফাইল পেজে চলে যান। এটি করার জন্য, নিম্নতম ডানদিকে অবস্থিত আপনার প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন।
Step 3) সেটিংসে প্রবেশ করুন
আপনার প্রোফাইল পেজে গিয়ে, উপরের ডানদিকে থ্রি ডট লাইন (মেনু) আইকনে ক্লিক করুন। এরপর “Settings” (সেটিংস) এ ক্লিক করুন।
Step 4) অ্যাকাউন্ট মেনু নির্বাচন করুন
সেটিংস পেজে, “Account” (অ্যাকাউন্ট) অপশনটি খুঁজুন এবং তাতে ক্লিক করুন।
Step 5) প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করুন
এখানে, “Switch to Professional Account” (পেশাদার অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করুন) অথবা “Switch to Business Account” (ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করুন) অপশনটি নির্বাচন করুন। আপনি যদি ইতোমধ্যে পেশাদার অ্যাকাউন্টে থাকেন, তবে “Add Business Tools” (ব্যবসায়ী সরঞ্জাম যোগ করুন) বা “Switch Account Type” (অ্যাকাউন্টের ধরন পরিবর্তন করুন) নির্বাচন করতে পারেন।
Step 6) ক্যাটেগরি নির্ধারণ করুন
এখানে আপনাকে একটি ক্যাটেগরি নির্বাচন করতে হবে যা আপনার ব্যবসার বা সার্ভিস এর সাথে সম্পর্কিত। বিভিন্ন ক্যাটেগরি থেকে নির্বাচন করুন, যেমন: ফ্যাশন, ফুড ব্লগ, পার্সোনাল ব্লগ ইত্যাদি অর্থাৎ আপনি যা নিয়ে কাজ করবেন সেটা এখানে দিবেন।
Step 7) যোগাযোগের তথ্য আপডেট করুন
আপনার ব্যবসার যোগাযোগের তথ্য যেমন ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা, এবং লোকেশন যুক্ত করুন। এই তথ্যগুলি গ্রাহকদের আপনার সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে সহায়ক হবে।
Step 8) আপনার প্রোফাইল কাস্টমাইজ করুন
আপনার ব্যবসার সম্পর্কিত একটি আকর্ষণীয় এবং সংক্ষেপে বায়ো লিখুন। আপনি কি ধরনের সার্ভিস দিচ্ছেন বা কি নিয়ে কাজ করছেন এবং কেন গ্রাহকরা আপনার পণ্য বা সার্ভিস নির্বাচন করবেন তা স্পষ্ট করে লিখে দিন এতে করে কাস্টমারদের মনে আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট নিয়ে আস্থা তৈরি হবে। আপনার লোগো বা ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত একটি ছবি আপলোড করুন যা আপনার ব্র্যান্ডকে উপস্থাপন করে।
এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি সহজে আপনার ইন্সটাগ্রাম ব্যবসায়িক প্রোফাইল আপগ্রেড করতে পারেন। এই প্রোফাইল আপনাকে আপনার পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধি করতে এবং আপনার মার্কেটিং কৌশলকে কার্যকর করতে সাহায্য করবে।
২) সঠিক নিশ (Niche) নির্বাচন করুন
নিশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। আপনার কাজের জন্য আকর্ষণীয় নিশ নির্বাচন করুন, যেটি আপনার পছন্দ এবং ফলোয়ারদের চাহিদার সাথে মানানসই। নিশ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন, ফিটনেস, ফটোগ্রাফি, বিউটি প্রোডাক্টস, বা ট্রাভেল ব্লগ ইত্যাদি। সুনির্দিষ্ট নিশে কাজ করলে আপনি সেই নির্ধারিত অডিয়েন্সের উপর বেশি প্রভাব ফেলতে পারবেন। ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং এ নিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এলোমেলো ভাবে কাজ না করে একটি সঠিক ও নির্দিষ্ট নিশ নির্বাচন করলে আপনার ব্র্যান্ড বা ব্যবসার প্রচার এবং প্রসার অনেক বেশি কার্যকরী হতে পারে। ইন্সটাগ্রামের বিশাল এবং বহুবিধ ব্যবহারকারীর মধ্যে নিজের সঠিক লক্ষ্যবস্তু দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নিশ নির্ধারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক নিশ নির্বাচনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।
# নিজের আগ্রহ চিহ্নিত করুন
প্রথমেই নিজের আগ্রহগুলি চিহ্নিত করুন। আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তা জানুন।
# মার্কেট বিশ্লেষণ করুন
আপনার আগ্রহের নিসে মার্কেটে বর্তমানে কী প্রবণতা চলছে তা বিশ্লেষণ করুন। সেই সঙ্গে প্রতিযোগিতা কেমন তা বোঝার চেষ্টা করুন।
# ট্রেন্ডিং ও হ্যাশট্যাগ অনুসন্ধান করুন
ইনস্টাগ্রাম হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ট্রেন্ডিং বিষয়গুলি খুঁজে বের করুন। এটি আপনাকে কোন নিসে কাজ করা সবচেয়ে বুদ্ধিমান হবে তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে।
# গবেষণার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু দর্শকদের নির্ধারণ করুন
আপনার নিসে সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু দর্শকদের সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা করুন। তাদের আগ্রহ, আচরণ, এবং কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করুন।
# কন্টেন্ট আইডিয়া সংগ্রহ করুন
বিভিন্ন কন্টেন্ট আইডিয়া জোগাড় করুন যা আপনার নিসের দর্শকদের আকর্ষণ করবে। এটি আপনার কন্টেন্ট পরিকল্পনা ও সৃষ্টি প্রক্রিয়াকে সাহায্য করবে। সঠিক নিস নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং উপরের কৌশলগুলি অনুসরণ করলে এটি অনেক সহজ হবে।
৩) ইনস্টাগ্রাম টুলস ব্যবহার করুন
ইনস্টাগ্রামের বিজনেস প্রোফাইল অনেকটা ফেসবুকের বিজনেস প্রোফাইল এর মত। খুব বেশি ভিন্ন না বলতে পারেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ইনস্টাগ্রাম Insights এর মাধ্যমে আপনি ইম্প্রেশন, Engagement Data এবং আরো বিভিন্ন কিছুর Statistics দেখতে পারবেন। এমনকি আপনি আপনার ফলোয়ারদের ডেমোগ্রাফিক তথ্যও জানতে পারবেন। আর তা হতে পারে তাদের বয়স, লিঙ্গ, লোকেশন এবং সবচেয়ে বেশি অ্যাক্টিভ থাকার সময়।
আপনি একটি পোস্টের জন্যে স্পেসিফিক Insights দেখতে পাবেন, যে এক সপ্তাহে আপনি কি পরিমাণ ইম্প্রেশন অর্জন করেছেন এবং কোনটা আপনার টপ পোস্ট নির্ধারিত হয়েছে। এই ফ্রি টুলসগুলো আসলেই অনেক মূল্যবান কারণ এতে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে আপনার ইউজারদের কোন কন্টেন্ট এর সাথে ইন্টারেকশন বেশি, তারা কি চাচ্ছে। আপনি যত বেশি জানবেন, যে কোন কন্টেন্টগুলো আপনার ইউজারদের বেশি আকৃষ্ট করছে, ততবেশি আপনি আপনার কন্টেন্টকে বুস্ট Engagement এ সংযুক্ত করতে পারবেন। Product teasers হচ্ছে অন্যতম একটি Attention-grabbing ক্যাটাগরি।
৪) প্রোডাক্ট Teaser পোস্ট করুন
আপনি চাইলে ইনস্টাগ্রামে শুধু Product Teaser পোস্ট করে অনেক বেশি সেল করতে পারেন এবং আপনার নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে কাস্টমারদের বেশি করে জানাতে পারেন। কারন ইনস্টাগ্রাম হচ্ছে প্রোডাক্ট Advertise অন্যতম একটি জায়গা। Product Teaser পোস্টগুলো হচ্ছে মূলত সহজ ভাবে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলা ও মানুষকে জানানো। যেমন একটা ব্র্যান্ড তাদের প্রোডাক্টের উপর ৭০% অফার রেখেছে এবং সেই সব প্রোডাক্টের ছবি শেয়ার করেছে যেগুলো সেই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে ও পোস্টটি হাজারের উপর লাইকও পেয়েছে।
এই ধরনের মার্কেটিং অ্যাড রিচ অনেক বেশি হয় এবং কাস্টমার রিয়েক্ট অনেক বেশি করে। তার কারন হল এখানে সরাসরি কোন পন্য কিনার কথা বল হচ্ছে না। এখানে শুধু প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলা হচ্ছে এবং অফার সম্পর্কে বলা হচ্ছে। সব সময় কাস্টমারদের কিনার কথা বললে এক ধরনের বিরক্ত চলে আসে। তাই কিনার কথা না বলে যখন প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলবেন তখন কাস্টমারের কিনার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। আর যদি নাও কিনে অন্তত পোস্টে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের মাধ্যমে আপনার Post Engagement অনেক বেড়ে যাবে।
৫) ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট (UGC) শেয়ার করুন
ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট (UGC) হল যেকোনো কনটেন্ট যা ব্র্যান্ডের ভক্ত, কাস্টমার বা সাধারণ ইউজাররা তৈরি করে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করে। এ ধরনের কনটেন্টের মধ্যে ছবি, ভিডিও, ব্লগ পোস্ট, রিভিউ, এবং মন্তব্য ইত্যাদি হতে পারে।
কাস্টমার আপনার পণ্য ব্যবহার করে বা আপনার সেবা সম্পর্কে পোস্ট করলে, তাদের কনটেন্ট আপনার প্রোফাইলে শেয়ার করুন। এটি আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি অডিয়েন্সের বিশ্বাস বাড়াবে। শুধু তাই না ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট শেয়ার করে নতুন কাস্টমার পেতে পারেন এবং আপনার প্রোডাক্টের বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে পারেন।
UGC বা ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট সংগ্রহ করার উপায়
এখন আপনার ইউজার এমনতেই আপনার সম্পর্কে কিছু বলবে না বা কন্টেন্ট দিবে না। ত্যা জন্য আপনাকে কিছু সুন্দর এবং কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে করে কাস্টমার আপনার ব্রান্ড সম্পর্কে কন্টেন্ট তৈরি করে সেটা আপলোড দেয়। কিভাবে UGC সংগ্রহ করবেন তার কিছু টিপস নিচে দেয়া হল-
# হ্যাশট্যাগ ক্যাম্পেইন
একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডেড হ্যাশট্যাগ তৈরি করুন এবং কাস্টমারদের সেই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার অনুরোধ জানান যাতে তারা তাদের পোস্ট আপনার ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে পারে।
# ইভেন্ট বা প্রতিযোগিতা আয়োজন করুন
বিভিন্ন ইভেন্ট বা প্রতিযোগিতা আয়োজন করে কাস্টমারদের কে UGC অংশগ্রহণে উৎসাহিত করুন। প্রয়োজনে স্পেশাল প্রমোশনাল অফার চালু করুন যারা এই অফার নিতে চাইবে তারা নিজে থেকে আপনার ব্র্যান্ড এর জন্য কন্টেন্ট তৈরি করে পাঠাবে।
# মেনশন এবং ট্যাগ
কাস্টমারদের তাদের পোস্টে আপনার ব্র্যান্ডের ইউজারনেম মেনশন এবং ট্যাগ করার জন্য অনুরোধ করুন। এটি ইউজারনেম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে সাহায্য করবে।
এইভাবে যখন আপনি ইউজার জেনারেট কন্টেন্ট সংগ্রহ করে ফেলবেন তখন সেখান থেকে বাছাই করে ভাল মানের কন্টেন্ট গুলা শেয়ার দিবেন। এখন শেয়ার কোথায় কিভাবে দিবেন? ঠিক কন্টেন্ট নির্বাচন করে তা আপনার ইন্সটাগ্রাম ফিডে শেয়ার করুন।সম্ভব হলে পোস্টটিতে ফিল্টার ও এডিট করুন যেন তা আপনার ফিডের সাথে রিলেট করে। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিজ ব্যবহার করে UGC শেয়ার করুন এতে করে মানুষ বেশি দেখতে পারবে। পণ্যের রিভিউ বা অভিজ্ঞতা হাইলাইট করতে স্টোরি হাইলাইটস ব্যবহার করুন। আর অবশ্যই ইউজার কন্টেন্ট শেয়ার করার আগে প্রত্যেক ইউজার থেকে লিখিত অনুমতি নিন। এতে আইনগত সমস্যা এড়ানো যায় এবং UGC তৈরি করা ইউজারদের কাছে সম্মান প্রদর্শিত হয়।
৬) কনসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডিং এবং ভিজ্যুয়াল এস্থেটিক বজায় রাখুন
কনসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডিং এবং ভিজ্যুয়াল এস্থেটিক একটি ব্র্যান্ডের শক্তিশালী পরিচিতি গড়ে তোলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। এগুলো শুধু ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়িয়ে তোলে না, বরং গ্রাহকদের সাথে একটি স্থায়ী সম্পর্ক এবং আস্থার ভিত্তি তৈরি করে। আপনার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের মধ্যে সঙ্গতি তৈরি করুন। নির্দিষ্ট রঙের প্যালেট, ফন্ট, এবং ছবি-ভিডিওর স্টাইল বজায় রাখুন।কনসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডিং আপনার প্রোফাইলকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে এবং অডিয়েন্স সহজেই আপনার ব্র্যান্ড চিনতে পারবে।
একটি ব্র্যান্ডের সফল কনসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডিং এবং ভিজ্যুয়াল এস্থেটিক কীভাবে কাজ করে, তার উদাহরণ হিসেবে Apple এর কথা বলা যায়। Apple সবসময় তাদের মিনিমালিস্টিক ডিজাইন, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, নির্দিষ্ট ফন্ট এবং সুনির্দিষ্ট টোন বজায় রাখে। এটি তাদের একটি নির্ভরযোগ্য এবং প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে গ্রাহকদের কাছে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই আপনি যদি আপনার ব্রান্ড কে সবার থেকে আলাদা ভাবে পরিচিত করতে চান তাহলে আপনাকে কনসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডিং এবং ভিজ্যুয়াল এস্থেটিক ভাবে সাজিয়ে তুলতে হবে। যেখানে কাস্টমার আপনার ব্রান্ড এর কালার, লোগো, ফ্রন্ট স্টাইল যেখানে দেখবে তারা বুঝতে পারবে এটি আপনার ব্রান্ড।
৭) Instagram Stories ব্যবহার করে মার্কেটিং
Instagram Stories হলো ২৪ ঘণ্টার জন্য দৃশ্যমান হওয়া শর্ট-ফর্ম কনটেন্ট যা আপনার পণ্য বা সেবার প্রচার এবং ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। সঠিকভাবে Instagram Stories ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে এবং তাদের আকর্ষণ তৈরি করতে পারবেন। nstagram রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের Stories feature, যেমন ছবি, ছোট্ট ভিডিও, Rewind video, লাইভ ভিডিও, অথবা Boomerangs। আর আপনি আপনার ছবি বা ভিডিও কে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবহার করতে পারেন Canva এবং InVideo।
![]()
এখন ইনস্টাগ্রামে শুধু স্টোরি দিলেই হবে না। আপনি যদি কিছু সঠিক নিয়ম মেনে স্টোরি তৈরি করেন এবং আপলোড করেন তাহলে সেখান থেকে রেজাল্ট ভাল আসবে। এর জন্য আপনি চাইলে নিচের এই নিয়ম গুলা ফলো করতে পারেন।
# ট্রেন্ডি এবং সময়োপযোগী কনটেন্ট পোস্ট করুন
Stories-এর ২৪ ঘণ্টার সীমার মধ্যে ট্রেন্ডি কনটেন্ট আপলোড করুন। বর্তমানে ট্রেন্ডি এবং সময়ের সাথে যায় এমন কিছু আপলোড করতে হবে। কারন আপডেট জিনিস মানুষকে আকৃষ্ট করে বেশি।
# ইন্টারঅ্যাক্টিভ ফিচার ব্যবহার করুন
Instagram Stories-এর “Polls”, “Questions”, এবং “Quizzes” ফিচার ব্যবহার করে ফলোয়ারদের সাথে সরাসরি ইন্টারঅ্যাকশন বাড়াতে পারেন। এই ধরনের কনটেন্ট অডিয়েন্সকে নিয়মিত যুক্ত করে রাখে।
# ভিজ্যুয়াল এস্থেটিক রাখুন
Stories-এর জন্য হাই-কোয়ালিটি ছবি, ভিডিও, এবং গ্রাফিক্স তৈরি করুন। ব্র্যান্ড-এর রঙ, ফন্ট, এবং ডিজাইন শৈলীতে সামঞ্জস্য রাখুন যাতে ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ে।
# কাস্টমার স্টোরি শেয়ার করুন
গ্রাহকদের রিভিউ বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। এটি ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং নতুন কাস্টমারদের আকর্ষণ করে। আপনি এখানে ইউজার তৈরি কন্টেন্ট তাদের আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে মতামত এই সব কিছু শেয়ার করবেন। .
# প্রোমোশনাল অফার শেয়ার করুন
সময়োপযোগী ডিসকাউন্ট বা অফার সম্বন্ধে Stories-এ তথ্য দিন। “Countdown” স্টিকার ব্যবহার করে সময়সীমা অ্যাড করে দিতে পারেন। এতে করে কাস্টমারের দ্রুত কিনার প্রতি একটা আগ্রহ বাড়বে।
# ব্যাকস্টেজ কনটেন্ট বা “Behind The Scenes” শেয়ার করুন
প্রডাক্ট তৈরির প্রক্রিয়া অথবা টিমের সদস্যদের সাথে কাজের মুহূর্ত দেখান। এটি একটি মানবীয় সংযোগ তৈরি করে এবং Stories আকর্ষণীয় করে তোলে। এই ধরনের জিনিস মানুষ দেখতে খুবই পছন্দ করে। এবং কাস্টমারের আস্থা তৈরি হয়।
# CTA (Call-To-Action) মেসেজ যোগ করুন
“Swipe Up”, “Learn More” বা “Shop Now” ফিচার ব্যবহার করে দর্শকদের সরাসরি আপনার পণ্য বা সেবার শপিং পেজে বা ওয়েবসাইটে নিয়ে যান। এতে করে যাদের পছন্দ হবে তারা ক্লিক করে প্রোডাক্ট কিনে ফেলবে। Instagram Storiesআপনার ব্র্যান্ডকে বড় অডিয়েন্সের কাছে তুলে ধরার জন্য শক্তিশালী টুল। Stories-এর মাধ্যমে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ও শক্তিশালী গ্রাহক সম্পর্ক গড়ে তুলতে অনেক সহায়তা করবে। তাই নিয়মিত স্টোরি আপলোড করতে হবে।
৮) ইনস্টাগ্রাম রিলস ব্যবহার করুন
ইনস্টাগ্রামের রিলস (Reels) শর্ট ভিডিও ফিচার ব্র্যান্ড বা প্রোডাক্ট প্রোমোট করার জন্য খুবই কার্যকর। রিলস অন্যান্য পোস্টের তুলনায় বেশি অডিয়েন্স রিচ পেতে পারে। ইনস্টাগ্রাম রিলস ব্যবহার করে সফলভাবে মার্কেটিং করার জন্য নির্দিষ্ট কৌশল এবং পদক্ষেপ অনুসরণ করা প্রয়োজন। রিলস হলো ইনস্টাগ্রামের একটি জোরালো ফিচার, যা ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা, এনগেজমেন্ট, এবং বিক্রয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত কৌশল উল্লেখ করা হলো-
# ব্র্যান্ডের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং পরিকল্পনা করুন
রিলস তৈরির আগে মার্কেটিং-এর লক্ষ্যে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি আপনার পণ্য প্রচার করতে চান? ফলোয়ার সংখ্যা বাড়াতে চান? অথবা ব্র্যান্ড এওয়্যারনেস তৈরি করতে চান? পরিকল্পনার মাধ্যমে রিলস লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী রিলস তৈরি করুন।
# রিলস তৈরির জন্য সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন
কনটেন্ট আকর্ষণীয় এবং পেশাদার দেখানোর জন্য Canva এবং InVideo এর মতো টুল ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো রিলস-এর জন্য ফ্রেম, ফন্ট ও ভিজ্যুয়াল এফেক্ট যোগ করে একে শক্তিশালী করে তোলে।
# টার্গেটেড দর্শকদের জন্য কনটেন্ট তৈরি করুন
অডিয়েন্সের আগ্রহ ও চাহিদা বুঝে কনটেন্ট তৈরি করুন। রিলস আকর্ষণীয় করতে ট্রেন্ডিং থিম, আকর্ষণীয় ভাবে তৈরি করুন।
# ট্রেন্ড অনুসরণ করুন এবং ফিচারের ব্যবহার করুন
ইনস্টাগ্রামের ট্রেন্ডিং সাউন্ড এবং চ্যালেঞ্জ ব্যবহার করে রিলস তৈরি করলে রিচ বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দ্রুত ট্রেন্ডকে ধরতে রিলস-এর মিউজিক লাইব্রেরি থেকে ট্রেন্ডিং সাউন্ড ব্যবহার করতে পারেন।
![]()
# বিনোদন ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করুন
কনটেন্ট এমন হওয়া প্রয়োজন যা দর্শকদের সমস্যার সমাধান করে বা তাদের বিনোদন দেয়। উদাহরণস্বরূপ, পণ্য ব্যবহারের সহজ উপায় দেখিয়ে একটি রিল তৈরি করতে পারেন। বা আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট এর সাথে যায় এমন ধরনের রিলস তৈরি করুন সেখানে,কিছুটা বিনোদন এর মাধ্যমে শিখা যাবে।
# কনটেন্টে ব্র্যান্ড পরিচয় যুক্ত করুন
এটি কিন্তু আপনার ব্রান্ড কে সবার মধ্যে তুলে ধরার একটি সেরা মাধ্যমে। প্রতিটি রিলে ব্র্যান্ডের লোগো, রং, বা স্লোগান ব্যবহার করুন যাতে এটি দৃশ্যত আপনার ব্র্যান্ডের অংশ বলে মনে হয়।
# হ্যাশট্যাগ এবং কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন
নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড এবং হ্যাশট্যাগ দিয়ে কনটেন্টকে অপ্টিমাইজ করুন। প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগ যেমন #ReelsMarketing, #BusinessGrowth এবং আপনার নিজস্ব কাস্টম হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
# Analytics পর্যালোচনা করুন এবং কৌশল উন্নত করুন
রিলস-এর এনগেজমেন্ট ডেটা যেমন ভিউ, লাইক, শেয়ার, এবং কমেন্ট সংগ্রহ করুন। এই ডেটার ভিত্তিতে কনটেন্ট কৌশলে পরিবর্তন আনুন। Analytics কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক ভাবে Analytics করার মাধ্যমে আপনি প্রতিটা কাজ এর বিস্তারিত আপডেট পাচ্ছেন। কোন ধরনের রিলস বেশি রিচ হচ্ছে কাস্টমার কেমন টপিক এর রিলস বেশি দেখতে চাচ্ছে সেই বিষয়ে জানতে পারবেন। যা পরবর্তী কাজে বেশ সহায়তা করবে।
ইনস্টাগ্রাম রিলসের ট্রেন্ডগুলি দ্রুত পরিবর্তিত হয়, তাই সবসময় নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে আপডেট থাকতে হবে। ট্রেন্ডের সাথে আপনার ব্র্যান্ড বা কনটেন্ট যুক্ত করে রিলস তৈরি করুন। নিজস্ব ক্রিয়েটিভিটি যোগ করুন যাতে আপনার রিল অন্যদের থেকে আলাদা হয়। এভাবে রিলস ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্র্যান্ড বা পণ্যের মার্কেটিং আরও কার্যকর করতে পারবেন।
৯) ইনস্টাগ্রামে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করুন
ইনফ্লুয়েন্সের হলো এমন একজন যে অন্য মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে তাদের পরিবর্তন করে দেয় অর্থাৎ যে ব্যক্তি অন্যদেরকে দিক নির্দেশনা বা কোনো ভাল কাজে উৎসাহিত করে থাকে তাকে ইনফ্লুয়েন্সার বলে। ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বর্তমানে অত্যন্ত ফলপ্রসূ (Effective) এবং ভবিষ্যতের একটি শক্তিশালী মার্কেটিং প্রশিক্ষণ। সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন, কৌশলের সঠিক বাস্তবায়ন এবং প্রমোশনের সৃজনশীল কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ড সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
ইনস্টাগ্রামে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং একটি ব্যবসায়িক কৌশল যা ব্র্যান্ড বা পণ্যের প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ব্যবহার করে। ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত বড় সংখ্যক ফলোয়ার বা নিজস্ব একটি সক্রিয় সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করেন এবং তাদের মতামত বা পরামর্শ তাদের ফলোয়ারদের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যারা ইনফ্লুয়েন্স করেন তাদের অনেক বড় ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে এবং অনেকেই তার ভিডিও বা রিভিউ দেখে ইনফ্লুয়েন্স হয় সেই প্রোডাক্ট কিনার জন্য। বর্তমানে আমাদের লাইফস্টাইলে ইনফ্লুয়েন্সারা বিশেষ প্রভাব ফেলছে। আমরা এখন আমাদের চলা-ফেরা,খাওয়া -দাওয়া, ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, ট্রাভেল ইত্যাদি নানা বিষয়ে ইনফ্লুয়েন্সারদের ফলো করছি।
১০) নিয়মিত পোস্ট করুন
ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত এবং সঠিকভাবে পোস্ট করার কৌশল ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিংয়ে সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে এবং সঠিক নিয়ম অনুসারে পোস্ট করা আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের মধ্যে ব্র্যান্ডের উপস্থিতি বজায় রাখতে এবং পৌঁছানোর হার বাড়াতে সাহায্য করে। নিচে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হলো-
# সঠিক প্ল্যানিং এবং কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করুন
ইনস্টাগ্রামে সফল মার্কেটিংয়ের জন্য একটি কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার অপরিহার্য। এতে আপনি কী ধরনের কন্টেন্ট পোস্ট করবেন, কখন পোস্ট করবেন এবং কতবার পোস্ট করবেন সে বিষয়টি পরিকল্পনা করতে পারবেন।
# কন্টেন্ট টাইপ ঠিক করুন
ফটো, রিলস, স্টোরি, বা ভিডিও কোন ধরনের কন্টেন্ট কখন আপলোড দিবেন সেই বিষয়ে একটি তালিকা তৈরি করুন। এবং সপ্তাহ বা মাস ভিত্তিক পরিকল্পনা করুন। সপ্তাহে কতটি কন্টেন্ট এবং মাসে কতটি কন্টেন্ট পোস্ট করবেন।
টপিক অনুযায়ী ভিন্নধর্মী কন্টেন্ট যুক্ত করে পোস্ট করুন।
# সঠিক সময়ে পোস্ট করার কৌশল গ্রহণ করুন
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার সঠিক সময় নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সঠিক সময়ে পোস্ট করলে তা বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছায়। ইনস্টাগ্রামের জন্য রাত ৮টা সর্বোত্তম সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে অডিয়েন্সের সর্বোচ্চ গড় অ্যাঙ্গেজমেন্ট পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় সর্বোত্তম সময় রাত ৭টা (৭.১% অ্যাঙ্গেজমেন্ট)। তবে আপনার অডিয়েন্সের ইনসাইট অনুযায়ী, যেসব সময়ে তারা বেশি অ্যাক্টিভ থাকে, সেই সময়েই পোস্ট করুন।
# ট্রেন্ড অনুসরণ করুন এবং জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন
ইনস্টাগ্রামের অ্যালগরিদমে ট্রেন্ড ফলো করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পোস্টে জনপ্রিয় এবং ব্র্যান্ড রিলেটেড হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন। রিলস বা ভিডিও তৈরি করার সময় ট্রেন্ডিং মিউজিক বা চ্যালেঞ্জ ব্যবহার করুন।
# প্রতিনিয়ত অডিয়েন্স এনগেজমেন্ট চেক করুন
আপনার পোস্টের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করতে ইনস্টাগ্রাম ইনসাইটস ব্যবহার করুন। কোন সময়ের পোস্ট বেশি রিচ করেছে তা বিশ্লেষণ করুন। পোস্টের লাইক, কমেন্ট, বা শেয়ার রেট মনিটর করুন। তথ্য বিশ্লেষণ করে পোস্ট টাইমিং এবং কন্টেন্ট প্ল্যান সংশোধন করুন। কন্টেন্টের শেষে CTA ব্যবহার করুন, যেমন “কমেন্ট করুন”, “লিঙ্কে ক্লিক করুন”, বা “শেয়ার করুন”। এই নিয়মগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনি ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত পোস্ট করার মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ডের উপস্থিতি শক্তিশালী করতে পারবেন এবং বিজনেসে উন্নতি ঘটাতে পারবেন।
পরিশেষে একটি কথা বলব, ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং হলো আধুনিক যুগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা আপনার ব্র্যান্ড বা ক্যারিয়ারকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। উপরের ১০টি পাওয়ারফুল টিপস অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার অডিয়েন্সের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন এবং আয় বৃদ্ধি করতে পারবেন। নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করা, সঠিক নিশ নির্বাচন, এবং ইনস্টাগ্রামের বিশেষ ফিচারগুলো ব্যবহার আপনাকে সফলতার পথে এগিয়ে নেবে।
মনে রাখবেন, সঠিক কৌশল এবং ক্রিয়েটিভিটি একত্র করলে ইনস্টাগ্রাম শুধু ব্র্যান্ড বিল্ডিং নয়, বরং একটি লাভজনক ব্যবসার দিগন্ত খুলে দিতে পারে। সফল হতে এখনই শুরু করুন! আর এই বিষয়ে হাতে কলমে শিখতে জয়েন করে ফেলুন MSB Academy এর এই ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কোর্সটিতে ।
Comments