বর্তমান সময়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সব থেকে জনপ্রিয় এবং সহজ মাধ্যমে হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। একটি হিসাবে দেখা গিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৪৩% এরও বেশি ওয়েবসাইট তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় ওয়ার্ডপ্রেস। ওয়ার্ডপ্রেস ওপেনসোর্স হওয়াতে ইতিমধ্যে অনেক ফ্রি থিম এবং প্লাগিন রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে যে কেউ চাইলে কোনো প্রকার কোডিং ঝামেলা ছাড়াই যে কোন ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে। আর ওয়ার্ডপ্রেস সহজ হওয়াতে প্রতিদিন নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। এতে করে প্রচুর পরিমাণ ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট প্রয়োজনও হচ্ছে। আপনিও যদি ওয়েবসাইট ডিজাইন কিংবা ডেভেলপমেন্ট শিখে ইনকাম করতে চান সেক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে ওয়ার্ডপ্রেস শিখা হবে আপনার জীবনের একটি সেরা সিদ্ধান্ত।
এই ওয়ার্ডপ্রেস এর কিন্তু বিভিন্ন থিম এবং প্লাগিন রয়েছে যা কাস্টমাইজ করে মূলত ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। এই থিম এবং প্লাগিন যদি আপনি ডেভেলপমেন্ট করতে পারেন তাহলে আপনি অনেক উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম এন্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট শিখে কিভাবে আয় করবেন তার কিছু কার্যকারী উপায় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
WordPress কি?
প্রথমে আমাদের জানতে হবে ওয়ার্ডপ্রেস আসলে কি? ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে একটি ওপেনসোর্স ওয়েব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যা ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। Mike Little এবং Matt Mullenweg মে ২৭ , ২০০৩ সালে ওয়ার্ডপ্রেস তৈরি করে। একদম শুরুর দিকে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যেত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ওয়ার্ডপ্রেস ওপেনসোর্স হওয়াতে ডেভেলপার রা প্রচুর কন্ট্রিবিউট করেছে। আর তাই বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে প্রচুর ফ্রি থিম এবং প্লাগিন যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়। ইতিমধ্যে বিশ্বের ৪৩% এর বেশি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কি?
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে আপনার প্রথমেই একটি থিম লাগবে। একটি থিম এর মাধ্যমে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তার সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস থিম এর মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট এর ইমেজ, টেক্সট, ম্যানু ইত্যাদি বিভিন্ন কনটেন্ট আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। মূলত একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তার সবকিছুই ওয়ার্ডপ্রেস থিম এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস এর অনেক ফ্রি এবং প্রিমিয়াম এবং থিম রয়েছে। চাইলে যে কেউ এই সকল ফ্রি এবং প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবে। তবে ফ্রি থিম থেকে প্রিমিয়াম থিমে সুবিধা একটু বেশি থাকবে। তাই প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করাই ভাল।
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি?
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন হচ্ছে এমন একটি ছোট সফটওয়্যার যেটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে যুক্ত করার মাধ্যমে নতুন নতুন ফাংশন যুক্ত করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন তৈরী করার জন্য মূলত PHP, JavaScript, Mysql ব্যবহার হয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস এত জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিমধ্যে ৬০ হাজার প্লাগিন রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে যেকোনো ধরণের ফিচার যুক্ত করা যায় খুব সহজেই।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন কি?
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন হচ্ছে ইতিমধ্যে ডেভেলপমেন্ট করা থিম প্লাগিন ব্যবহার করে কোনো প্রকার কোডিং ছাড়া ওয়েবসাইট তৈরি করা। ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিমধ্যে অনেক ফ্রি থিম এবং প্লাগিন রয়েছে। যেই সকল থিম প্লাগিন গুলোর ইমেজ কনটেন্ট ইত্যাদি বিষয় পরিবর্তন করে নিজের মত করে ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায় খুব সহজে। আপনার ক্লায়েন্ট এর চাহিদা অনুযায়ী চাইলে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস Fiverr এবং Upwork এর মত জায়গা গুলাতে একটু সার্চ দিলে দেখবেন অনেক মানুষ এই বিষয়ে সার্ভিস দিয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন করে ওয়েবসাইট তৈরি করে চাইলে আপনিও ইনকাম করতে পারবেন।
আর এই ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন এর উপর আমাদের MSB Academy তে WordPress Theme & Plugin Customization Masterclass নামে একটি প্রফেশনাল কোর্স রয়েছে। কোন রকম প্রোগ্রামিং না শিখেই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যেকোন ধরণের প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট শিখে সফলতার সাথে ফ্রিল্যান্সিং অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজগুলো কিভাবে করবেন তার কমপ্লিট গাইডলাইন পেয়ে যাবেন এই কোর্সটি ভাল ভাবে কমপ্লিট করলে। আর বোনাস হিসেবে ১৫০০ ডলার মূল্যের প্রিমিয়াম থিম এবং প্লাগিনের লাইফটাইম লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কি?
ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিমধ্যে প্রচুর থিম প্লাগিন রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি চাইলে কোডিং ছাড়াই ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন | কিন্তু এই সকল থিম প্লাগিন কিন্তু কোনো না কোনো ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপার কোডিং ব্যবহার করে তৈরী করে রেখেছে | ইতিমধ্যে ডেভেলপমেন্ট করা থিম প্লাগিন গুলো ব্যবহার করে আপনি অনেক কিছুই করতে পারবেন না। আর ঠিক তখনি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এর থিম কিংবা কাস্টম প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট এর প্রয়োজন হবে। ওয়ার্ডপ্রেসে কাস্টম থিম প্লাগইন ডেভেলপ করতে আপনাকে অবশ্যই PHP, JAVASCRIPT, MYSQL, WordPress Theme & Plugin Development API ইত্যাদি বিষয় গুলো ভালো করে শিখতে হবে।
আর এই ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে Make Money By Selling WordPress Theme & Plugins Worldwide নামে একটি কোর্স পাবলিশ করা হয়েছে। প্রোগ্রামিং এর বেসিক থেকে এডভান্স, PHP, PHP OOP, AI টুলস এর ব্যবহার এবং ওয়ার্ডপ্রেস থিম এবং প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট স্টেপ-বাই-স্টেপ শিখানো হয়েছে কোর্সের মধ্যে। কোর্স কমপ্লিট করে যেকেও নিজের তৈরি Theme, Plugin গ্লোবালি বিক্রি করে প্রতি মাসে ৫০০ – ৫০০০ হাজার ডলার প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবে। এমনকি Fiverr, Upwork মার্কেটপ্লেসে হাই বাজেটের কাজ এবং রিমোট জবও কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। কোর্সের মধ্যে একবার জয়েন করলে রয়েছে লাইফ টাইম কোর্স এক্সেস + লাইফ টাইম সাপোর্ট এবং ফ্রি কোর্স আপডেট।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট শিখে আয় করার ১০টি উপায়
আপনি যদি একবার ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট ভাবে ভাবে শিখতে পারেন তাহলে নানা উপায়ে অনলাইন ও অফলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এখন আমি আপনাদের সাথে ঠিক তেমনি ১০টি ইনকাম এর উপায় শেয়ার করব।
১) অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ে অনলাইন থেকে আয়ের সবচেয়ে বড় একটি মাধ্যেম। অনলাইন থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে হলে আপনাকে কোন একটি স্কিল খুব ভাল করে শিখতে হবে। তাহলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে সেই স্কিলকে কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলারে যেমন Fiverr, Upwork, People Per Hour, Toptal, Codeable এর মত ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার লিখে সার্চ দেন তাহলে দেখতে পারবেন অনেকই মাসে লাখ টাকা ইনকাম করছে শুধু মাত্র ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে এবং তৈরি করা ওয়েবসাইটের মধ্যে থিম অ্যান্ড প্লাগিন কাস্টমাইজ করে ওয়েবসাইট আরও আপডেট করার সার্ভিস দিয়ে।
মার্কেটপ্লেস গুলতো একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডিজাইন কিংবা কাস্টমাইজ করে মিনিমাম ১০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া আপন যদি কাস্টম কোড ব্যবহার করে আপনার ক্লায়েন্ট এর জন্য থিম প্লাগিন তৈরি করে দেন সেক্ষেত্র হাজার ডলারও চার্জ করতে পারবেন একটি মাত্র ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকেই। এছাড়াও মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনার ক্লায়েন্ট কে ঘন্টা ভিত্তিক চুক্তিতে সার্ভিস দিয়ে আয় করতে পারবেন। একজন ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট সাধারণত ৩০-৫০ ডলার প্রতি ঘন্টায় নিয়ে থাকে। তাই আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস থিম এন্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট ভাল ভাবে শিখতে পারেন তাহলে আপনার অনলাইন ইনকাম জার্নি ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে শুরু করতে পারবেন।
২) নিজের ডেভেলপমেন্ট করা থিম প্লাগিন বিক্রি করে আয়
আপনার যদি ওয়ার্ডপ্রেস থিম কিংবা প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট করার দক্ষতা থাকে তাহলে, আপনি চাইলে আপনার ডেভেলপমেন্ট করা থিম প্লাগিন থিমফরেস্ট, কোডেকেনয়ন এর মতো মার্কেটপ্লেসগুলিতে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন। অথবা নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানেও আপনার ডেভেলপমেন্ট করা থিম অ্যান্ড প্লাগিন বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। থিম, প্লাগিন বিক্রি করার সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি একবার একটি থিম অথবা প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট করে ফেলতে পারলে সেই থিম প্লাগিন বার বার সেল করার মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশে এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের নিজেদের ডেভেলপমেন্ট করা থিম প্লাগিন বিক্রি করে লাখ লাখ ডলার ইনকাম করেছে। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারীদের জন্য নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করে এমন উচ্চ-মানের পণ্য তৈরি করে, আপনি বিক্রয় এবং রয়্যালটির মাধ্যমে প্যাসিভ আয় করতে পারেন।
৩) ওয়েবসাইট মেইনটেনেন্স ও কাস্ট মাইজেশন সার্ভিস প্রদান করে আয়
বিশ্বের প্রায় ৪৩% এর বেশি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাই এই সকল ওয়েবসাইট দেখাশোনা করার জন্য করার জন্য অনেক ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট প্রয়োজন হয়। সাধারণত একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পর ওয়েবসাইট এর বিভিন্ন কনটেন্ট বিভিন্ন সময় অ্যাড , এডিট, ডিলিট করার প্রয়োজন। এছাড়াও অনেক ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী তাদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে তাদের থিম এবং প্লাগইনগুলি কাস্টমাইজ করার জন্য এক্সপার্ট লোক খুঁজে থাকে। ওয়েবসাইট দেখাশোনা করার জন্য মাসিক বেতন ভিত্তিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্টদের চুক্তিভিত্তিক কাজ দিয়ে থাকে। একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন সার্ভিস প্রদান করে মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করতে পারবেন।
৪) দেশীয় কোম্পানিতে চাকরি করে আয়
বর্তমানে প্রায় ছোট বড় প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের একটি সুন্দর ওয়েবসাইট থাকে। যার প্রেক্ষিতে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর ওয়েবসাইট ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি গড়ে উঠেছে। আপনি যদি একজন দক্ষ্য ওয়েব ডেভেলপার হতে পারেন তাহলে আপনি চাইলে এই সকল কোম্পানিতে ওয়েবসাইট ডিজাইন ডেভেলপার হিসেবে চাকুরী করে প্রতি মাসে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে আপনি মাসে ২০,০০০ – ৩০,০০০ টাকা স্টারটিং এবং সিনিওর অবস্থাতে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। দেশীয় কোম্পানি গুলো সাধারনত ওয়ার্ডপ্রেস এর কাস্টম থিম এবং প্লাগইন ডেভেলপারদের চাকরি দিয়ে থাকে বেশি। ৫-৬ বছরের অভিজ্ঞতা হওয়ার পর অনেক কোম্পানি ১ লাখ টাকার স্যালারি দিয়ে থাকে একজন ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্টকে সাথে আরও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ত রয়েছেই।
৫) বিদেশি কোম্পানিতে রিমোট জব করে আয়
প্রযুক্তির কল্যাণে কিন্তু এখন কাজের অনেক সুযোগ সুবিধা তৈরি হয়েছে। এখন অনেক মানুষ এক দেশে বসে অন্য দেশের জন্য কাজ করে ইনকাম করছে। যেখানে অফিসে যাওয়ার কোন ঝামেলা নেই। একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে হবে। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস থিম প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট ভালো করে শিখতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি দেশের বাহিরের অনেক কোম্পানিতে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হিসাবে রিমোট জব করে প্রতি মাসে ২-৩ হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন ঘরে বসেই। এছাড়া শুধু কাস্টমাইজেশন করেও এখন অনেক কোম্পানিতে রিমোট জব পাওয়া যাচ্ছে। রিমোট জব এর সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর মতন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ক্লায়েন্ট খুঁজতে হবে না। আপনি একবার একটি রিমোট জব পেয়ে গেলেই মাসের পর মাস একটি ফিক্সড ইনকাম করতে পারবেন। সাধারণত আমেরিকা, কানাডা, জার্মানি , অস্ট্রেলিয়া ঐসব দেশের কোম্পানি গুলো সব থেকে বেশি ভালো সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে একজন এক্সপার্ট ওয়েব ডেভেলাপার দেরকে।
৬) ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট শিখিয়ে আয়
এমন অনেক মানুষ আছে যারা ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট শিখতে চায়। অনেকে সঠিক গাইডলাইন পায় না শিখার জন্য। আর বর্তমানে কিন্তু অনলাইনে বিভিন্ন স্কিল শিখার প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি। আর একজন অভিজ্ঞ ডেভেলপার হিসেবে এইটা আপনার নৈতিক দায়িত্ব আপনার মূল্যবান জ্ঞান অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া। অনলাইনে এখন অনেক এডুকেশনাল একাডেমী রয়েছে সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স পাবলিশ করা হয়। লাইভ ক্লাস এবং প্রিরেকর্ড ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরির মাধ্যমে অনেকে তার অর্জিত স্কিল অন্যকে শিখয়ে টাকা ইনকাম করছে। এতে করে ইনকাম যেমন হচ্ছে পাশাপাশি নতুন নতুন আরও ডেভেলপার তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও Udemy, Skillshare-এর মতো আন্তর্জাতিক মানের প্ল্যাটফর্মগুলিতে চাইলে কোর্স টিউটোরিয়াল পাবলিশ করে ইনকাম করা যায়।
যেমন MSB Academy তে আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে Make Money By Selling WordPress Theme & Plugins Worldwide নামে একটি প্রফেশনাল কোর্স পাবলিশ করেছি। যেখানে হাজারের উপরে স্টুডেন্ট জয়েন করেছে এবং তাদের মত করে কাজ শিখছে। চাইলে আপনি এই কোর্সে জয়েন হয়ে শিখা শুরু করে দিতে পারেন। আপনি নিজে এই কোর্সের মধ্যে যে কোন সমস্যার সাপোর্ট এবং আপডেট দিয়ে থাকি।
৭) ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট প্রোমোটে করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিমধ্যে প্রচুর প্রিমিয়াম এবং ফ্রি থিম এবং প্লাগিন রয়েছে। অনেক কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে যেখানে আপনি তাদের পণ্য এবং সার্ভিসের প্রচার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। হোস্টিং প্রদানকারী, থিম স্টোর, প্লাগইন ডেভেলপার এবং অন্যান্য সম্পর্কিত পণ্য নিয়ে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। Themeforest, Templatemonster, Wedevs, Radiustheme, Elementor, Divi, Themeum ইত্যাদি বিভিন্ন কোম্পানি প্রোডাক্ট সেল করার বিনিময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন দিয়ে থাকে যাকে বলে অ্যাফিলিয়েট কমিশন।
আপনার যদি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে সেখানে আপনি এই সকল থিম অ্যান্ড প্লাগিন নিয়ে সুন্দর করে ভিডিও তৈরি করতে পারেন কারণ অনেকেই বুঝে না কোন Hosting বা কোন থিম এবং প্লাগিন ভাল হবে। আপনি যদি সুন্দর করে এই সকল বিষয়ের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে ভিডিও তৈরি করে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক ভিডিও সাথে অ্যাড করে দেন তাহলে যারা আপনার দেয়া লিঙ্কে কিক্ল করে কিনবে তার বিনিময়ে আপনি একটা কমিশন পেয়ে যাবেন। চাইলে আপনি এইটা ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগ বা আর্টিকেল লিখে সেখানে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক যুক্ত করে দিতে পারেন।
৮) ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়
একদম শুরুর দিকে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যেত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখন ওয়ার্ডপ্রেস এতটা আপডেট হয়েছে যে, এখন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যে কোন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। আপনি চাইলে আপনার নিজের জন্য যেমন ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে লেখালাখি করে গুগলে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও যখন আপনার ওয়েবসাইটি অনেক জনপ্রিয় হবে তখন বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে স্পনসরশিপ দিতে চাইবে। তখন সেই স্পন্সরশীপ পোস্ট এবং বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমেও আপনি ভালো একটি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আর বর্তমানে অনেক ছোট বড় কোম্পানি গুলা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। আপনি চাইলে অন্যের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে সেখান থেকেও আয় করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে যদি আপনার ভাল দক্ষতা থাকে তাহলে কিন্তু এই সকল ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনাকে খুব বেশি সময় এবং পরিশ্রম করা লাগবে না।
৯) ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বিক্রি করে
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ইনকাম করার নানা ধরনের মধ্যে এটি একটি উপায়। আপনি চাইলে আপনার তৈরি করা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটটি বিক্রি করে এককালীন মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ওয়েবসাইট বিক্রি করার জন্য অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে Flippa, Empire Flippers, Buysell Empire, Acquire, Motion Invest, ইত্যাদি। তবে ওয়েবসাইট বিক্রি করার জন্য অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটি যথেষ্ট পরিমান পপুলার হতে হবে | বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল, ইয়াহু তে SEO করার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটর নিয়ে এসে আপনার ওয়েবসাইট কে জনপ্রিয় করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইট জনপ্রিয় হয়ে গেলে আপনার ওয়েবসাইটি বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
১০) ই-কমার্স বিজনেস করে আয়
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে এখন চাইলে খুব সহজে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। আর বর্তমানে কিন্তু ই কমার্স বিজনেস এর মার্কেট বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে মধ্যে প্রচুর ই কমার্স বিজনেস রয়েছে | আপনিও চাইলে নিজে একটি ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনার পণ্য বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন। যেহেতু ডেভেলপমেন্ট আপনি নিজে করবেন তাই আপনার মত করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
তবে ইকমার্স বিজনেস করতে গেলে ডেভেলপমেন্ট এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে। কারণ ই কমার্স বিজনেসে মার্কেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মার্কেটিং নিয়ে আমাদের All In One Digital Marketing এর উপর একটি কোর্স রয়েছে। যেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর A to Z শিখানো হয়েছে। এছাড়া দেশের অনেকর ফেসবুক পেজ রয়েছে যাদের কোনো প্রকার ওয়েবসাইট এখনো নেই। তারা মূলত ফেসবুক এর মাধ্যমে বিজনেস করে থাকে। আপনি চাইলে এইসব ফেইসবুক পেজ মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে বলে তাদের বিজনেস এর জন্য ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে ইনকাম করতে পারেন। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই তাদের কে ই কমার্স বিজনেস ওয়েবসাইট এর প্রয়োজনীয়তা এবং সুবিধা গুলা বলে বুঝাতে হবে।
পরিশেষে একটি কথা বলব, ওয়ার্ডপ্রেস থিম অ্যান্ড প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট এমন একটি সেক্টর আপনি যদি একবার এই সেক্টরে এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে চাইলে ভিন্ন উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।
Comments