Blog

ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে স্কিল বৃদ্ধি এবং ইনকামের ৫টি উপায়

digital marketing

আপনি হয়ত ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছেন। কারণ দক্ষতা বৃদ্ধি করলে বাংলাদেশেই মাসিক ৩০,০০০টাকা – ৪০,০০০ টাকা বেতনের প্রচুর চাকুরি রয়েছে। আর অনলাইনে ইনকামের সুযোগতো আছেই। কিন্তু কোর্স সম্পন্ন করলেই আপনার চাকুরি হয়ে যাবেনা। রিয়েল প্রজেক্টে করার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকতে হবে। এখন প্রশ্ন চাকুরি না দিলে অভিজ্ঞতা কিভাবে অর্জন হবে? চাকুরি পাওয়ার আগেই কিভাবেই অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, সেই বিষয়টি নিয়েই আমার এই ব্লগ পোস্ট।

১) ফাইভারের গিগ র‌্যাংকিং

Fiverr একটি খুব জনপ্রিয় ফ্রীলেন্স মার্কেটপ্লেস। যেখানে প্রচুর বায়ার আছে, যারা কিনা আপনাকে আপনার সার্ভিস নেয়ার জন্য অর্ডার দিবে। আপনার স্কিল থাকলে, ফাইভার মার্কেটপ্লেস আপনার জন্য হতে পারে একটা গ্রেট মার্কেটপ্লেস। ফাইভারে আপনার গিগ রয়েছে, সেই গিগকে ফোরাম পোস্টিং, ব্লগ কমেন্টিং, ব্লগে আর্টিকেল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে গিগকে র‌্যাংকিং করেন। ভাল প্রাকটিস হবে। কাজটা বৃথা সময় নষ্ট হবেনা। প্রাকটিস যেমন হবে, গিগে প্রচুর অর্ডার পেয়ে যাবেন। প্রাকটিস, ইনকাম দুইটাই হয়ে গেলো।

আপনার যদি ডিজিটাল স্কিল থাকে তাহলে ফাইবারের গিগ রাঙ্কিং করে যেমন ইনকাম করতে পারেন এর পাশাপাশি কিন্তু আপনি চাইলে ফাইবার থেকে নিজে কাজ করে ইনকাম ও করতে পারবেন। এই সম্পর্কিত বিস্তারিত গাইড লাইন নিয়ে MSB Academy তে একটি কোর্সও রয়েছে। Fiverr-এ সার্ভিস দেয়া শুরু করার জন্য Gig তৈরির স্টেপ-বাই-স্টেপ পদ্ধতি। আকর্ষণীয় গিগ ইমেজ তৈরির কমপ্লিট গাইডলাইন সহ সেলার অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করা + অ্যাকাউন্ট অপটিমাইজ করা এবং কিভাবে সফলতার সাথে ফ্রীলেন্সিং করবেন তার A to Z গাইডলাইন হাতে কলমে পেতে চাইলে MSB Academy- এর Ultimate Fiverr Success কোর্সে জয়েন হতে পারেন। বর্তমানে প্রচুর চাহিদা আছে, এমন ১৮টি ভিন্ন ভিন্ন কাজ হাতে-কলমে শিখানো হয়েছে।

২) ফেসবুক পেজকে পপুলার করা

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সেক্টর হচ্ছে ফেসবুক। আর ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে যে জিনিস সবার আগে প্রয়োজন সেটা হল একটি প্রফেশনাল বিজনেস পেজ। আপনার যদি নিজের একটি বিজনেস পেইজ থাকে এবং সেখানে যদি অনেক বেশি ফ্যান ফলোয়ার থাকে তাহলে ফ্রি মার্কেটিং করেও প্রতি মাসে লাখ টাকার উপর ইনকাম করতে পারবেন। পপুলার একটি ফেসবুক পেজ থাকলে নিজের মার্কেটিং স্কিলকে কাজে লাগিয়ে নিজের প্রোডাক্ট মার্কেটিং করে সেল করার পাশাপাশি আপনি চাইলে অন্যের প্রোডাক্টও আপনার পেজে মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি আপনার ফেসবুক পেজে In-Stream Ads এর মাধ্যমে ad শো করার মধ্যে দিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আপনার যদি একটি পুপলার পেজ থাকে তাহলে আপনি মার্কেটিং স্কিলকে কাজে লাগিয়ে সেই পেজ থেকে নানা উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

যেকোন মানিং ম্যাকিং সাবজেক্ট নিয়ে পেজ রেডি করে ফেলেন। সেই পেজে নিয়মমাফিক অ্যাংগেজমেন্ট বৃদ্ধির চেষ্টা করেন। সেই পেজ থেকে ইনকাম জেনারেট হয় কিনা সেই চেষ্টা করেন। ইনকাম, প্রাকটিস দুটিই হবে। আর ফেসবুকে নিজের বা কোম্পানির যেকোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করার ফ্রি অ্যান্ড পেইড পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে জয়েন করতে পারেন আমাদের বেস্টসেলিং Facebook and Messenger Marketing কোর্সে।

৩) নিজের ব্লগকে পপুলার করা

ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিলকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে ইনকামের আরও একটি বেস্ট মাধ্যেম হল Blogging। Blogging হচ্ছে এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে ভাল উপার্জন করতে পারেন। ব্লগ ওয়েবসাইট দুই ভাবে বানাতে পারেন, ব্যক্তিগত এবং সোস্যাল। ব্যক্তিগত ব্লগে শুধু আপনি আপনার জ্ঞ্যান বা আইডিয়াগুলো লিখে পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। আর সোশ্যাল ব্লগের মাধ্যমে যে কোন ইউজার লগিন করে তাদের নিজস্ব জ্ঞ্যান বা আইডিয়া গুলো আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবে। লেখা যত বেশি হবে, পাঠকের সংখ্যা তত বেশি বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সুতারাং পাঠকের সংখ্যা যত বেশি হবে আপনার ওয়েবসাইটের রেংকিং এবং ট্রাফিক বেশি হবে। ট্রাফিক যত বেশি হবে তত বেশি উপার্জন করতে পারবেন। এখন আপনি চাইলে নিজে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করে করতে পারেন অথবা অন্যের ব্লগ সাইটে নিজের লেখা প্রকাশ করতে পারেন।

তবে আমি বলব নিজের একটা ব্লগ খুলেন। সেই ব্লগকে র‌্যাংক করার জন্য যতরকম চেষ্টা আছে, মানে যা যা শিখেছেন, সেগুলোর প্রাকটিস করুন। দেখেন ব্লগটাকে র‌্যাংক করতে পারেন কিনা। চাইলে ব্লগটা হতে পারে, ফাইভারের গিগ সেল করার জন্য। সেইভাবে ব্লগটার পরিকল্পনা করেন। তাহলে ইনকামটা দ্রুত শুরু হবে। চাইলে অন্যের গিগকেও তখন আপনার ব্লগে তাদের সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত লিখার মাধ্যমে তাদের মার্কেটিং করে দিতে পারবেন। ইনকাম, প্রাকটিস ‍দুইটাই এবারও হলো।

৪) ডাইরেক্ট বায়ার ধরে ইনকাম প্রাকটিস

ডিরেক্ট বায়ার পাওয়ার কতগুলো পন্থা খুজে বের করতে পারেন, সেগুলো শিখে নেন। সম্ভাব্য বায়ারকে বায়ারে কনভার্ট করার জন্যই এসইও বা মার্কেটিং এক্সপার্টদের রাখা হয়। আপনি সেই কাজটি করতে পারছেন কিনা, প্রাকটিস করেন। বায়ার খোজার সোর্সগুলোও সম্পর্কেও শিখা হলো, বায়ারদের কনভেন্স করাটাও প্রাকটিস হলো। সেই সাথে এখানেও ইনকামটা নিশ্চিত করতে পারলেন।

৫) নিজের স্কীলটাকে প্রচার করা

আচ্ছা উপরের কিছুই করতে পারছেননা। আচ্ছা, তাহলে শুধু এটাই করেন। আপনার স্কীল রিলেটেড বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার কমিউনিটি, গেস্ট ব্লগ সাইট, এবং ফোরাম সাইটগুলোতে আপনাকে স্কীল পার্সন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। এটাও যদি না পারেন, তাহলে অন্য কোম্পানীর প্রোডাক্টকে সেরা হিসেবে কিভাবে প্রতিষ্ঠা করবেন? তাই আগে নিজের স্কীলকেই মার্কেটিং করুন। প্রাকটিস হবে, অনেক জায়গাতে কাজের জন্য হায়ার হয়ে যাবেন। কারন মনে রাখতে হবে প্রচারে প্রসার। আপনার নিজের স্কিলকে যত বেশি প্রচার করতে পারবেন মানুষ তত আপনার কাজ দেখবে এবং দিন শেষে আপনার নিজের প্রসার হবে, উন্নতি হবে। তাই নিজের স্কিল এবং মেধাকে প্রচার করতে প্রকাশ করতে কখনও লজ্জাবোধ করবেন না। যত পারবেন এটাকে প্রচার এবং প্রকাশ করবেন।

উপরের ৫টার যেকোন একটা স্কীল অর্জনেই আজ থেকে প্রাকটিস শুরু করেন। এই পোস্ট পড়ার পর, আশা করি, কারও অজুহাত থাকবেনা যে, আমাকে কেউ কাজ না দিলে আমি কিভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করবো। আর মনে রাখবেন, মার্কেটিং মানে শুধু বিভিন্ন মিডিয়া এবং টুলস সম্পর্কে জ্ঞান না। আরও অনেক কিছু, যা প্রাকটিস করেই দক্ষতা অর্জন করতে হয়। জীবনে কিছু না করে সেই দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। আর অদক্ষ লোককে কেউ চাকুরিতে নেওয়ার মত রিস্ক কখনই নিবেনা। আপনি নিজে হলেও নিবেননা। তাই বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে স্কিল অর্জন ছাড়া সম্ভব না।

Comments

Leave a Reply