Blog

কার্টুন অ্যানিমেশন তৈরি শিখে ৭টি ভিন্ন উপায়ে ইনকামের সুযোগ

make cartoon animation and earn money bangla

আপনার কি সৃজনশীলতার প্রতি আবেগ এবং কার্টুনের প্রতি ভালবাসা আছে? যদি তাই হয় তবে কেন আপনার শখকে একটি লাভজনক ক্যারিয়ারে পরিণত করবেন না? কার্টুন অ্যানিমেশন শেখা আমরা যতটা কঠিন ভাবি এটি তার চাইতে অনেক সহজ! কার্টুন অ্যানিমেশন ইনকামের অফুরন্ত রাস্তা তৈরি করে দেয়, YouTube শর্টস তৈরি করা থেকে শুরু করে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের জন্য অ্যানিমেটেড মুভি কোথায় নেই অ্যানিমেশনের আধিপত্য?! একজন দক্ষ অ্যানিমেটর হয়ে ঘড়ে বসেই লোকাল ক্লাইন্ট ছাড়াও, Upwork, Fiverr, Freelancer – এর মত বড় বড় মার্কেটপ্লেসেও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

আপনার যদি অ্যানিমেশন এর প্রতি আগ্রহ থাকে এবং ইচ্ছা থাকে অ্যানিমেশন নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার তাহলে আজকের এই ব্লগটি আপনার জন্য। অ্যানিমেশন কি? কার্টুন অ্যানিমেশন শেখার সুবিধা,শিখতে কি কি লাগবে, ড্রইং ছাড়াও কিভাবে অ্যানিমেশন করা যায় এবং অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ইনকামের নানা উপায় মোটকথা কার্টুন অ্যানিমেশন নিয়ে একটি কমপ্লিট গাইডলাইন পাচ্ছেন এই ব্লগে।

কার্টুন অ্যানিমেশন কি?

অ্যানিমেশন হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে অনেকগুলো স্থির চিত্রকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে ভিডিও আকারে তৈরি করা হয়। অর্থাৎ কিছু স্থির বস্তু অ্যানিমেশন এর মাধ্যমে গতিশীল হয়ে উঠে। অ্যানিমেশন হচ্ছে স্থির চিত্রের একটি ক্রম যেগুলোকে বিশেষ প্রক্রিয়া লক্ষ্য করলে জীবন্ত ও সচল বলে মনে হয়। অ্যানিমেশন অনেক ধরনের হতে পারে। তবে বেশি জনপ্রিয় হল 2D এবং 3D অ্যানিমেশন এবং এটি বিনোদন, শিক্ষা এবং বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়। কার্টুন অ্যানিমেশন কিন্তু বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ

১) ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশনঃ এটি হাতে আঁকা অ্যানিমেশন নামেও পরিচিত, এটি একটি ক্লাসিক কৌশল যেখানে প্রতিটি ফ্রেম একটি ক্রমানুসারে চলাচলের বিভ্রম তৈরি করে, যা হাতে আঁকা হয়। এটি অ্যানিমেশনের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি।

২) 2D অ্যানিমেশনঃ 2D অ্যানিমেশন হল এক ধরনের অ্যানিমেশন যেখানে ক্যারেক্টারস এবং অবজেক্ট একটি সমতল পৃষ্ঠে আঁকা হয়। এটি অনেকগুলো ছবি দিয়ে একটি ফ্লিপবুক তৈরি করার মতো যা দ্রুত পরিবর্তন করলে, জিনিসগুলিকে নড়াচড়া মনে হয়। এটি কাগজে হাতে বা কম্পিউটার ব্যবহার করে ডিজিটালভাবে করা যেতে পারে। আমরা কার্টুন, সিনেমা, গেম এবং বিজ্ঞাপনে 2D অ্যানিমেশন এর ব্যাপক ব্যবহার দেখতে পাই। এবং এই অ্যানিমেশন বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা।

৩) 3D অ্যানিমেশনঃ 3D অ্যানিমেশন হল ত্রি ডাইমেনশনাল অ্যানিমেশন যা ক্যারেক্টারস এবং অবজেক্টকে জীবন্ত করে তোলে। এখানে এই প্রাণবন্ত 3D মডেল তৈরি করতে কম্পিউটার সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয়।তারপর একটি ভার্চুয়াল পরিবেশে তাদের সরিয়ে এবং পজিশনিং করে তাদের অ্যানিমেট করা হয় ৷ এর ফলে সিনেমা, ভিডিও গেম এবং অন্যান্য মিডিয়াতে বাস্তবসম্মত দৃশ্য দেখা যায়।

৪) মোশন ক্যাপচার অ্যানিমেশনঃ মোশন ক্যাপচার অ্যানিমেশন এমন একটি কৌশল যা রিয়াল টাইম গতিবিধি ক্যাপচার করে এবং তারপর অ্যানিমেটেড ক্যারেক্টারস বা অব্জেক্টে প্রয়োগ করা হয়। বিশেষ স্যুট বা মার্কার পরে অভিনেতা বা অভিনয়শিল্পীদের মুভমেন্ট রেকর্ড করে এবং তারপরে সেই ডেটা স্থানান্তর করে অ্যানিমেশনে রুপান্তর করা হয়। এই পদ্ধতিটি সাধারণত চলচ্চিত্র, ভিডিও গেম এবং মিডিয়ার অন্যান্য বিষয়গুলিতে ব্যবহৃত হয়।

৫) মোশন গ্রাফিক্সঃ মোশন গ্রাফিক্স হল ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশনের একটি ফর্ম যা গ্রাফিক ডিজাইন, অ্যানিমেশন এবং ফিল্ম মেকিং এর উপাদানগুলিকে একত্রিত করে আকর্ষক এবং গতিশীল ভিডিও তৈরি করে। এটি চলমান চিত্র, টেক্সট এবং অন্যান্য ভিজ্যুয়াল উপাদানগুলির ব্যবহার করে চিত্তাকর্ষক এবং ইন্টারেক্টিভ উপায়ে তথ্য জানাতে, গল্প বলতে সাহায্য করে। মোশন গ্রাফিক্স সাধারণত বিজ্ঞাপন, এক্সপ্লেইনিং ভিডিও, শিরোনাম সিকোয়েন্স এবং অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়।

কোন ধরনের অ্যানিমেশন শিখা সহজ?

আমরা বেশ কিছু অ্যানিমেশনের ধরন সম্পর্কে জানলাম। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এদের মধ্যে কোন ধরনের অ্যানিমেশন শেখা সহজ?  আপনার কোন অ্যানিমেশন শেখার প্রতি নজর দেওয়া উচিৎ এবং কেন! এখন একজন অ্যানিমেটর হিসেবে আমি মনে করি  2D অ্যানিমেশন। হ্যাঁ, 2D অ্যানিমেশন শিখা অধিকতর সহজ, প্রচলিত এবং এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 2D অ্যানিমেশন শেখা অন্যান্য অ্যানিমেশন এর চেয়ে কেন সহজ এর কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করা হলঃ

১) সফ্টওয়্যার অ্যাক্সেসিবিলিটিঃ যারা অ্যানিমেশন জগতে নতুন তাদের জন্য প্রথম যে সমস্যাটি সম্মুখীন হতে হয়, তা হল অ্যানিমেশন তৈরিতে ইউজার ফ্রেন্ডলি সফটওয়্যার খুজে পাওয়া। যেখানে 2D অ্যানিমেশন ব্যাপক ভাবে এগিয়ে। 2D অ্যানিমেশন তৈরি করার জন্য বেশ কিছু ইউজার ফ্রেন্ডলি সফটওয়্যারস রয়েছে। যেগুলো ব্যবহারে বেসিক টু এ্যাডভান্সড অ্যানিমেশন শিখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এদের মধ্যে এ্যাডবি এনিমেট, এ্যাডবি কার্টুন এনিমেটর অন্যতম।

২) ট্রেডিশনাল আর্ট স্কিলসঃ অনেকেই আছেন যারা ছোটবেলা থেকে অংকনে পারদর্শী এবং গল্প লিখতে – পড়তে ভালোবাসেন। তাদের জন্য 2D অ্যানিমেশন শেখা অধিকতর সহজ ও সময় উপযোগী। 2D অ্যানিমেশনে আপনার ট্রেডিশনাল ড্রইং গুলোকে অ্যানিমেশন আকারে বাস্তবে রুপ দিতে পারবে। সেগুলোকে গল্পের আলোকে অ্যানিমেশন করে বানাতে পারেন শর্ট ফিল্ম, ফেইরি টেলস, ভৌতিক কার্টুন ইত্যাদি। এবং সেগুলো ইউটিউব, ফেজবুকে আপলোড করে ম্যাসিভ পরিমান ইনকাম করতে পারেন।

animation-create-bangla

৩) টেকনিক্যাল কমপ্লিসিটিঃ 3D অ্যানিমেশনেরচেয়ে 2D অ্যানিমেশন শেখা সহজ কারণ এটি সিম্পল টুলস এবং মেথড ব্যবহার করে করা হয়। 2D-এ, আপনি ফ্ল্যাট ড্রয়িং নিয়ে কাজ করেন, যখন 3D তে আরও জটিল সফ্টওয়্যার, রিগিং এবং মডেলিং জড়িত থাকে।

৪) লার্নিং রিসোর্সঃ অনলাইনে প্রচুর টিউটোরিয়াল, কোর্স এবং কমিউনিটি রয়েছে যাদের মাধ্যমে 2D অ্যানিমেশন শেখা তুলনামুলক অনেক সহজ৷ যেখানে অন্যান্য অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে একদম ভিন্ন অবস্থান লক্ষ করা যায়। এমএসবি একাডেমীতেও Make Animated Videos & Earn $1500/Month From YouTube – নামে একটি 2d কার্টুন অ্যানিমেশ কোর্স রয়েছে।

2D অ্যানিমেশন শিখতে কি ড্রইং জানা আবশ্যক?

অ্যানিমেশন শিখতে যাওয়ার আগে আমাদের সবার মাথায় প্রথম সে প্রশ্নটি আসে সেটা হল আমিত ড্রইং পারি না অ্যানিমেশন শিখতে কি ড্রইং জানতেই হবে? এটার সহজ উওর হল হ্যাঁ এবং না। দুটই। কারণ মুলত যারা ফ্রেম বাই ফ্রেম এ্যানিমেশন করে থাকেন, বা করতে চান তাদের জন্য ড্রইং এ দক্ষ হওয়া জরুরী। এখন প্রশ্ন আসতে পারে ফ্রেম বাই ফ্রেম এ্যানিমেশন কি জিনিস। সহজ ভাষায় যদি বলি, আমরা সবাই টম এ্যান্ড জেরী কার্টুন দেখেছি। মুলত এই টম এ্যান্ড জেরী টাইপের কার্টুন গুলোই ফ্রেম বাই ফ্রেম এ্যানিমেশন স্টাইলে তৈরি করা। এখানে প্রতিটা মুভমেন্ট বা ফ্রেমে একেক্টা ড্রইং করা। সুতরাং এখানে আপনার ড্রইং এ দক্ষ হতেই হবে।

drawing

কিন্তু আপনি যদি গোপাল ভার, লুল্লু ভুত এই ধরনের কার্টুন গুলো দেখে থাকেন, এগুলো হচ্ছে ভেক্টর এ্যানিমেশন। আর এই এ্যানিমেশন স্টাইলে ড্রইং স্কিল না থাকলেও চলে। যতটুকু দরকার তা আপনি কাজ করতে করতেই শিখে যাবেন। তাই যারা ড্রইং পারেন না বলে এ্যানিমেশন শিখা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তাদের কাছে এই বিষয়টা একদম পরিষ্কার হয়ে গেছে আশা করি। আসলে সব ধরনের অ্যানিমেশনে ড্রইং জানা লাগে না। আপনি ড্রইং না জেনেও অনেক ভাল মানের অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারবেন যদি আপনার শিখার ইচ্ছা থাকে।

2D কার্টুন অ্যানিমেশন বানানোর ধাপসমূহ

প্রতিটা কাজের কিছু ধাপ রয়েছে অ্যানিমেশন এর ক্ষেত্রে ঠিক তাই। কাটুন অ্যানিমেশন তৈরি করতে হলে আপনাকে নিজের এই ৬টি ধাপ গুলো ফলো করতে হবে।

১) গল্প নির্বাচনঃ কার্টুন অ্যানিমেশন তৈরি করার প্রথম ধাপটাই হচ্ছে গল্প ঠিক করা। এমন একটা গল্প যেটা আপনি ভালো বলতে পারেন এবং দর্শকও সেটা দেখতে পছন্দ করবে। মনে রাখবেন যদি গল্প ভালো এবং আকর্ষনীয় হয় তাহলে এ্যানিমেশন একটু দুর্বল হলেও মানুষ তা উপভোগ করবে। সুতরাং গল্প সিলেকশন সময় কোন রকম অলসতা করা যবে না।

২) ভাল মানের স্ক্রিপ্টঃ গল্প তৈরি হলে সেই গল্পের সাথে মিল রেখে স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হবে। গল্পের সাথে মিল রেখে স্ক্রিপ্টে সৃজনশীলতা আনতে হবে। গল্পের সংলাপ গুলো এমন হতে হবে যাতে ক্যারেক্টার ও দৃশ্যের সাথে মিল থাকে।

৩) স্টোরিবোর্ডঃ অ্যানিমেশন তৈরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোর একটা হচ্ছে স্টোরিবোর্ড। গল্পে কোন কোন ক্যারেক্টার লাগবে, কি কি দৃশ্য লাগবে, এই সব কিছু একটি নোটপেড এ লিখে রাখতে হবে। এতে কাজ অনেক দ্রুত ও ইফেক্টিভ হয়।

৪) ভয়েজ রেকর্ডিং ও এডিটিংঃ গল্প বাছাই ও লিখা হয়ে গেলে গল্পের সংলাপ অনুযায়ী ক্যারেক্টার ওয়াইজ ভয়েজ রেকর্ডিং করে নিতে হবে। এবং সেগুলোকে নয়েজ রিমুভ করে ব্যবহার উপযুক্ত করে নিতে হবে। অডিও এডিটিং এর জন্য এখন অনেক ভাল মানের সফটওয়্যার রয়েছে যার সাহায্য এইটা করতে পারবেন। MSB Academy এর অ্যানিমেশন কোর্সের জয়েন করলে এই সকল প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ফ্রিতে পেয়ে যাবেন।

৫) অ্যানিমেটিকঃ অ্যানিমেটিক হল আপনার গল্পের এ্যানিমেটেড ভার্সন। ভয়েজ এর সঙ্গে মিল রেখে সঠিক দৃশ্যায়নের মাধ্যমে এনিমেশন করতে হয়।

৬) ভিডিও এডিটিং ও সাউন্ড ইফেক্টঃ অ্যানিমেটেড ভিডিওর ফাইনাল আউটলুক আরও গর্জিয়াস ও ইফেক্টিভ করতে ইডিটিং করতে হয়। দৃশ্যের বেইজ বুঝে ইফেক্টিভ সাউন্ড ইফেক্টস এ্যাড করার মাধ্যমে ভিডিওকে কাঙ্ক্ষিত রুপে রুপায়ন করতে হয়।

৭টি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে অ্যানিমেশন শিখে ইনকাম

১) ফ্রিল্যান্সিং এবং রিমোট জব করে আয়  

একজন অ্যানিমেটর হিসাবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার সার্ভিস অফার করতে পারেন। ঘরে বসে কাজ করে আপনি একসাথে বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের কাজ করতে পারেন । ফাইবার, ফ্রিলান্সার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে 2D শর্ট কার্টুনের প্রচুর চাহিদা প্রচুর। দেশ এবং দেশের বাহিরে এমন অসংখ্য এনিমেটররা তাদের সার্ভিস গুলো এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রদান করে আয় করছে হাজার হাজার ডলার।

তাছাড়াও বিভিন্ন লোকাল ক্লাইন্টদের অ্যানিমেশন সেবা দিয়েও ঘরে বসেই ইনকাম সম্ভব। অ্যানিমেশন তৈরি করতে হলে আপনার কোন অফিস এর প্রয়োজন নেই। আপনার ঘরে বসেই আপনি তৈরি করতে পারবেন। বিভিন্ন কোম্পানির রিমোট জব করে ইনকাম করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।

২) অ্যানিমেশন কন্টেন্ট তৈরি করে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে আয় 

আপনার নিজস্ব অ্যানিমেটেড কন্টেন্ট তৈরি করে, যেমন শর্ট ফিল্ম, ওয়েব সিরিজ, বা কার্টুন গল্প ইত্যাদি YouTube বা Facebook-এর মতো প্ল্যাটফর্মে পাবলিশ করে গুগল এ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় এবং স্পনসরশিপের মাধ্যমে, একটি আকর্ষনীয় ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। ইউটিউবে কার্টুন অ্যানিমেশনের প্রচুর চাহিদা। বিভিন্ন ধরনের রুপকথার গল্প, শিক্ষামুলক ভিডিও, ভৌতিক ভিডিও চ্যানেলগুলোর ভিউস দেখলে চোখ কপালে উঠে যায়। চাঁদের বুড়ি, Z Imaginary Story, Prio Cartoon Tube, Sujon Animation, Bangla Bhuter Golpo এই সকল ইউটিউব চ্যানেলগুলি এর বাস্তব উদাহরন।আসলে গল্পের স্ক্রিপ্ট,অ্যানিমেশন তৈরির প্রসেস এবং ইউটিউবের ব্যপারে সঠিক নলেজ থাকলে কার্টুন অ্যানিমেশন চ্যানেল থেকে প্রচুর ইনকাম করা সম্ভব।

ইউটিউব এর মত এখন কিন্তু ফেসবুকে ইনকাম করার একটা সুযোগ রয়েছে। আপনি চাইলে আপনার তৈরি অ্যানিমেশন কন্টেন্ট ফেসবুক নিজের একটি পেজ খুলে সেখানে আপলোড করে আয় করতে পারবেন। সুতরাং বুঝতে পারছেন একটি কাজ করে আপনি কিন্তু সেটা দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

৩) অ্যানিমেটেড মোশন ভিডিও তৈরি করে আয়  

অনেক কোম্পানি প্রচারমূলক ভিডিও, এ্যাক্সপ্লেইনার ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনের জন্য অ্যানিমেটেড কন্টেন্ট খোঁজে। তাদের জন্য অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়েও ভালো ইনকাম সোর্স তৈরি করা সম্ভব। শুধুমাত্র এই অ্যানিমেটেড মোশন ভিডিও সার্ভিস প্রদান করেই গড়ে উঠেছে মাল্টি মিলিয়ন ডলার্সের কোম্পানি। Ending Scene, Animation Studio, সহ এমন অসংখ্য স্টুডিও তার বাস্তব উদাহরন। ডিজিটাল মার্কেটিং করে একটি কোম্পানি যতদ্রুত গ্রো হতে পারে, তা লোকাল মার্কেটিং এর দ্বারা কখনই সম্ভব নয়। আর এটি বুঝতে পেরে প্রায় সকল কোম্পানি গুলোই ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে অধিক ঝোক দিচ্ছে। আর মোশন ভিডিও হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম অস্ত্র। তাই 2D Animation শিখলে আপনি অ্যানিমেটেড মোশন ভিডিও এর সেক্টরেও কাজ করার করে ইনকাম করার বিশাল একটি সুযোগ পাচ্ছেন।

৪) অনলাইনে অ্যানিমেশন শিখিয়ে আয় 

একটা সময় শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু প্রতিষ্ঠানে থাকলেও এখন কিন্তু আর সে রকম টা নেই। প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন ঘরে বসেও অনলাইনে অনেক কিছু শিখা যায়। দিন দিন এটা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক বড় এবং ভাল মানের অনলাইন একাডেমী এখন রয়েছে সেখানে আপনি আপনার এই অ্যানিমেশন দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে অ্যানিমেশন কোর্স বা টিউটোরিয়াল তৈরি করে আপনার দক্ষতা শেয়ার করতে আয় করতে পারেন।। ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যাপক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।

অ্যানিমেশন শিখে দক্ষ হতে পারলে ১০ মিনিট স্কুল, এমএসবি একাডেমী, এমন জনপ্রিয়সব অনলাইন এডুকেশনাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কোর্স সেল করেও কিন্তু আপনি প্যাসিভ একটা ইনকাম করতে পারবেন। 2D অ্যানিমেশনের এই জয়জয়কার সময়ে এই সুযোগটা হাতছাড়া করা হবে চরম ভুল।

৫) অ্যানিমেটেড বিজ্ঞাপন এবং সোশ্যাল মার্কেটিং করে আয় 

সময়ের সাথে সাথে কিন্তু এখন টিভি বিজ্ঞাপন গুলাতে পরিবর্তন এসেছে। এখন আর মানুষ নিয়ে বিশাল আয়োজন করে বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয় না। এখন টিভিতে, সোসাল মিডিয়াতে আমরা যত এ্যাডস দেখে থাকি, তার অধিকাংশই হচ্ছে অ্যানিমেটেড অ্যাডস। এটি সহজ সাপেক্ষ এবং কম খরচে বানানো সম্ভব। যেখানে নরমাল ভিডিও অ্যাডস বানাতে হিউজ একটা এমাউন্টের প্রয়োজন হয়, সেখানে তুলনামুলক অনেক কম খরচেই অ্যানিমেটেড অ্যাডস বানানো সম্ভব।  দৃষ্টিনন্দন ও ইফেক্টিভ বলে সবাই এখন ব্যবসার জন্য Animated Ads বানাতে চায়।

প্রফেশনাল লেভেলের 2D Animation শিখে নজরকাড়া অ্যানিমেটেড এ্যাডস এবং আকর্ষক সামাজিক মিডিয়া কন্টেন্ট বানাতে পারলে আপনি এই কাজগুলো করার সুযোগ পাবেন। আর এই সম্ভাবনাময় মার্কেটে 2D অ্যানিমেশন দিয়ে অ্যানিমেটেড অ্যাডস বানানো শিখতে পারলে প্রতি মাসে একটা স্মার্ট Amount ইনকাম করা সম্ভব।

৬) ক্যারেক্টার এবং অ্যাসেট ডিজাইন করে আয়  

অনলাইনের বিভিন্ন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট যেমনঃ Unity Asset Store অথবা Gumroad – এর মতো প্ল্যাটফর্মে অ্যানিমেশন অ্যাসেট তৈরি করে একটা ভালো ইনকাম জেনারেট তৈরি করা সম্ভব। 2D অ্যানিমেশ শিখে অ্যানিমেটেড ক্যারেক্টারস ডিজাইন, ব্যাকগ্রাউন্ডস এবং অ্যানিমেশন গুলো বিক্রির মাধ্যমে একটা প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ রয়েছে। দেশ বিদেশে এমন অসংখ্য এনিমেটর আছে যারা শুধু এই অ্যানিমেটেড কন্টেন্টগুলো বিক্রি করেই হাজার হাজার ডলারস আয় করছে।

৭) অ্যানিমেশন স্টুডিও এবং এজেন্সিতে জব করে আয় 

অনেক অ্যানিমেশন স্টূডিও এবং কোম্পানিগুলি রিমোট অ্যানিমেশন জব অফার করে থাকে। একজন দক্ষ এনিমেটর হতে পারলে ঘরে বসেই কিন্তু আপনি এই জবগুলো করতে পারবেন। রিমোট জব গুলো আপনি ঘরে বসেই সহজে করতে পারছেন। অফিস স্পেস, কম্পিউটার সরঞ্জাম, বা কোন ধরনের বাহ্যিক সহযোগীতা প্রদান করতে হয় না বলে অনেক বড় বড় কোম্পানিগুলো রিমোট জব অফার করছে। বিভিন্ন অনলাইন জব সাইটগুলোতে অ্যানিমেশন লিখে সার্চ করলেই দেখবেন অসংখ্য জব অফার চলে এসেছে। আপনি এখন দক্ষ অ্যানিমেটর হতে পারলে সহজে এই জব করে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন। আপনাই চাইলে ফুল টাইম জব করতে পারবেন অথবা পার্ট টাইম জব করতে পারবেন।

কিভাবে প্রফেশনাল 2D Cartoon Animation তৈরি করা শিখবেন ?  

অ্যানিমেশন কি? কিভাবে অ্যানিমেশন তৈরি করতে হয়? এবং অ্যানিমেশন তৈরি করে কি ভাবে আয় করা যায় আশা করি উপরের এই লেখাটুকু পড়ে এত সময়ে আপনি অ্যানিমেশন সম্পর্কে ক্লিয়ার একটি ধারণা পেয়ে গেছেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে কোথা থেকে শিখবেন প্রফেশনাল মানের অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরি। আপনার জন্য সু-খবর হচ্ছে MSB Academy তে পাবলিশ হয়ে গেছে Make Animated Videos & Earn 1000$+ Per Month On YouTube নামে একটি কোর্স। যেখানে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই এবং ড্রইং ছাড়াই কি ভাবে কাটুন অ্যানিমেশন তৈরি করবেন সে বিষয়ে একদম বেসিক থেকে এডভান্স পর্যন্ত সব কিছু শিখনো হয়েছে।

প্রফেশনাল মানের 2D Cartoon Animation তৈরির প্রসেস + সহজে নতুন ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ + ভিডিওতে প্রচুর ভিউস পাওয়ার টেকনিক + Passive Income করার সিক্রেট – এইসব কিছুর কম্বিনেশনে মূলত এই কোর্সটি তৈরি করা হয়েছে। আপনি কোর্সটিতে একবার জয়েন করলে পাবেন লাইফ টাইম কোর্স এক্সেস+লাইফ টাইম আপডেট এবং লাইফ টাইম সাপোর্ট। কাজ শিখার জন্য যে সফটওয়্যার লাগবে সব কিছু কোর্সের সাথে দিয়ে দেয়া হবে। So এখন আপনার যদি ইচ্ছা থাকে একজন প্রফেশনাল এনিমেটর হয়ে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়ার তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়া শেষ করে জয়েন হয়ে যান কোর্সটিতে।

পরিশেষে একটি কথা, দিন যত যাবে অ্যানিমেশনের চাহিদা আরও বাড়বে। এখনো এই অ্যানিমেশন ওয়ার্ল্ডে দক্ষ এনিমেটরের সংখ্যা খুবই কম। তাই বলা যায় আপনি যদি এই অ্যানিমেশন সেক্টরে প্রফেশনাল ভাবে কাজ শিখেতে পারেন তাহলে সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। কারণ এই সেক্টরের যে চাহিদা সেই তুলনায় প্রফেশনাল মানের এনিমেটর অনেক কম রয়েছে। তাই সময় নষ্ট না করে এই সেক্টরে স্কিল অর্জন শুরু করে দিন।

Comments

  • User Avatar
    Anjali
    August 8, 2023

    ধন্যবাদ এত সুন্দর করে বুঝিয়ে বলার জন্য। আমি আপনাদের অ্যানিমেশন কোর্সটি করেছি আশা করি ভাল কিছু শিখতে পারব।

  • User Avatar
    lalbabu
    August 8, 2023

    অসাধারণ লিখেছেন

  • User Avatar
    Sunil Yadav
    August 8, 2023

    thanks eito sundor kore bolar jony.

Leave a Reply