যারা অনলাইনে কোন কিছু করার জন্য ঘাটাঘাটি করেন তারা ওয়ার্ডপ্রেস নামটির সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত। কোডিং এর ঝামেলা ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য বর্তমান সময়ে ওয়ার্ডপ্রেস খুবই জনপ্রিয়। একটা সময় ছিল যখন কোন ওয়েবসাইট তৈরির কথা চিন্তা করলেই চোখের সামনে শুধু কোডিং ভাসত। এখনও কোডিং এর প্রয়োজন হয় কিন্তু বিশাল কোডিং এর ঝামেলা থেকে যারা নিজেকে মুক্ত রাখতে চায়, তাদের পছন্দ এই ওয়ার্ডপ্রেস। যেখানে ফ্রি এবং পেইড প্লাগিন ব্যবহার করে খুব সহজে তৈরি করে ফেলা অসাধারণ সব ওয়েবসাইট এবং সেটা নিজের মত করে কাস্টমাইজও করা যায়।
আর আজকের এই ব্লগে আমরা জানব, ওয়ার্ডপ্রেস কি? কি ভাবে এটি কাজ করে? এবং কেন WordPress গ্লোবালি এত বেশি জনপ্রিয় সবার কাছে?
ওয়ার্ডপ্রেস কি?
ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে বর্তমানে সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্লগ পাবলিশিং অ্যাপলিকেশন এবং শক্তিশালী কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS), যা পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দ্বারা তৈরিকৃত ওপেন সোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার। একটি PHP ও MySQL দ্বারা তৈরি উন্মুক্ত প্রযুক্তি ব্লগিং সফটওয়্যার। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ওয়ার্ডপ্রেস হলো ওয়েবসাইট ও ব্লগ তৈরীর সবচেয়ে সহজ ও বহুল জনপ্রিয় মাধ্যম। বিশ্বের প্রায় ৪৫৫ মিলিয়ন ওয়েবসাইট বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। যা ওয়ার্ল্ডের মোট ওয়েবসাইটের প্রায় ৪৮% (২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী)
ওয়ার্ডপ্রেস কেন এত জনপ্রিয়?
ওয়ার্ডপ্রেস হল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় Open Source Content Management System (CMS) যা চাইলে সবাই নিজের ওয়েব সার্ভারে ফ্রিতে ইন্সটল করে যে কোন রকমের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবে। PHP দ্বারা লেখা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী একটি সফটওয়্যার হল ওয়ার্ডপ্রেস। ওয়ার্ডপ্রেস সবার কাছে জনপ্রিয় হবার আরও একটি বড় কারন হল, এইটা সম্পূর্ণ ফ্রি তাই চাইলেই যেকেউ এটি ব্যবহার করতে পারে। এখানে কোন কোডিং ঝামেলা নেই। ওয়ার্ডপ্রেস রয়েছে হাজার রকমের ফ্রি থিম, টুলস এবং প্লাগিন। যা আপনি নিজেই ইন্সটল এবং কাস্টমাইজ করে নিজের মনের মত ওয়েবসাইট তৈরি এবং মেইনটেইন করতে পারবেন। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস এর ব্যবহার একবার শিখতে পারেন তাহলে ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনাকে কোন ওয়েব ডেভলপার হায়ার করতে হবে না। এছাড়া ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য ডেভেলপাররা বিভিন্ন রকম পেইড প্লাগিনও বানাচ্ছে, যা ব্যাবহারের মাধ্যমে ইউজাররা খুব সহজে ওয়েবসাইটে নিজের ইচ্ছামত অপশন অ্যান্ড ফিচার অ্যাড করতে পারছে। যা কিনা কোডিং এর মাধ্যমে কোন ডেভেলপারকে দিয়ে ম্যানুয়ালি করাতে গেলে হাজার ডলার খরচ করা লাগত। এইসব আরও বিভিন্ন কারণেই মূলত গ্লোবালি ওয়ার্ডপ্রেস এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
WordPress কেন শিখবেন?
আপনি যদি বর্তমান সময়ে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান বা আপনি যদি মনে করেন নিজের একটি ওয়েবসাইট বা একটি ব্লগ সাইট থাকুক যেখানে নিজের মত করে নিজে যা জানেন সেটা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করবেন তাহলে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে আপনার মনের মত করে নিজের একটি সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়া ওয়ার্ডপ্রেসের WooCommece প্লাগিনের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি প্রোডাক্ট কেনা-বেচা করার জন্য ই-কমার্স সাইটও তৈরি করতে পারবেন। এছাড়া ইলার্নিং প্লাটফর্ম, ডিজিটাল স্টোর তৈরির জন্যও রয়েছে Powerful সব ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন।
আর ঘরে বসে সহজে ইনকাম করতে চাইলে বা কোন ভাল প্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে WordPress এক্সপার্টদের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। কারণ, ওয়ার্ডপ্রেসে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ফ্রি এবং পেইড থিম এবং প্লাগিন। যা কাস্টমাইজ করার মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে ছোট ছোট সমস্যা অনেকেই ফেইস করে থাকে, আপনি যদি এই ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন ভাল ভাবে জানেন সেটা সমাধান করে দিয়ে রয়েছে ইনকাম করার একটা সুযোগ।
বর্তমানে ছোট বড় সব কোম্পানি চায় তাদের একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকুক। আপনি চাইলে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে একটা ভাল ইনকাম করতে পারেন আবার অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট দেখাশোনা করার জন্য একজন ডেভলপার নিয়োগ দিয়ে থাকে আপনি চাইলে সেখানেও ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। আসলে একটা শক্ত ক্যারিয়ার সেখানেই গড়া সম্ভব, যেই সেক্টরে ভালো কাজের প্রচুর চাহিদা এবং ভালো মার্কেট ডিমান্ড আছে। আর ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে ঠিক তেমনই একটা সেক্টর। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ওয়ার্ডপ্রেস শিখাটা এখন এমন একটা স্কিল, যা আপনি একবার শিখে ফেললে নিজের ওয়েবসাইট তৈরির পাশাপাশি লোকালি, এমনকি ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেসেও সার্ভিস দেয়ার মাধ্যমে আরনিং করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানাতে কি কি লাগে?
- ডোমেইন
- হোস্টিং
- থিম
- অ্যান্ড প্লাগিন
নিচের এই ভিডিওটি দেখলে বুঝতে পারবেন যে, কীভাবে ডোমেইন, হোস্টিং কেনার পর ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে হয়ঃ
WordPress থিম কি?
সহজ কথায়, ওয়ার্ডপ্রেস থিম হলো কতগুলো ফাইলের সমষ্টি যা একসাথে কাজ করে একটি গ্রাফিকাল ডিজাইন তৈরি করে থাকে সাধারণত তাকেই ওয়ার্ডপ্রেস থিম বলে। WordPress Theme এর উপর নির্ভর করে সাইট টির রং, সাইড বার, মেনু সহ আরো অনেক কিছু। এই থিম গুলোকে একটি ওয়েবসাইটে কিভাবে প্রদর্শন করা হবে তা নির্দেশ করে। WordPress-এর থিম ডিরেক্টরিতে আপনি সব ফ্রি থিম পাবেন আর Themeforest, StudioPress এর মত আরও অনেক মার্কেটপ্লেস আছে, যেখানে সব প্রিমিয়াম থিম পাবেন। যা আপনাকে কিনে ব্যাবহার করতে হবে।
WordPress প্লাগিন কি?
সাধারণত ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবার জন্য প্লাগইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারণ একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে কি কি ফাংশান বা ফিচার অ্যাড করবেন তা অনেক আংশে প্লাগিনের উপর নির্ভর করে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস সবার কাছে এত জনপ্রিয় হবার প্রধান একটি কারন হল এই প্লাগিন। অনেক রকমের প্লাগিন রয়েছে যে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ ব্যবহার করে নিজের মত করে সাঁজাতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেসের প্লাগিনকে আপনি মোবাইল অ্যাপের সাথে তুলনা করতে পারেন। আমরা যেমন বিভিন্ন দরকারে বিভিন্ন রকম অ্যাপ ইন্সটল করে মোবাইলে ব্যাবহার করি, ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনও অনেকটা সেইরকম। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ফিচার অ্যাড করার জন্য আমাদের ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে বিভিন্ন প্লাগিন ইন্সটল করতে হয়।
WordPress ব্যাবহারের সুবিধা
- ওয়ার্ডপ্রেস হল সম্পূর্ণ ফ্রি একটি CMS, যা ব্যাবহারের জন্য আপনাকে কোন টাকা দিতে হবে না।
- শুধু ব্লগ বা সাধারন ওয়েবসাইট ছাড়াও আপনি চাইলে সব ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন এই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে।
- খুব সহজে থিম পরিবর্তন করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের বা ব্লগের ডিজাইনও পরিবর্তন করতে পারবেন।
- কাস্টমাইজ এর মাধ্যমে খুব সহজে যেকোন সময় নিজের ব্লগ এবং ওয়েবসাইট এর ডিজাইন এডিট করতে পারবেন।
- সব ধরনের অ্যাডভানস ফাংশন ওয়ার্ডপ্রেস এ পেয়ে যাবেন। যেমনঃ Social sharing options, Responsive website Design, SEO friendly Structure, Easy Customization
- বিভিন্ন ফ্রি / পেইড থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করে খুব সহজে ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ফাংশন বাড়তে পারবেন।
- সহজে যে কোন ধরনের মিডিয়া ফাইল, অডিও , ভিডিও ,ছবি আপলোড করতে পারবেন।
- ওয়ার্ডপ্রেস শেখা এবং ব্যবহার অনেক সহজ। কোডিং এর কোন ঝামেলা নেই।
- ওয়ার্ডপ্রেসের ডেভেলপার কমিউনিটি বিশাল বড়, তাই যেকোনো বিশেষ সমস্যার সমাধান খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
WordPress শিখতে কত দিন লাগবে?
ওয়ার্ডপ্রেসে যেহেতু কোডিং এর কোন ঝামেলা নাই, তাই এইটা শিখতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে শুরু দিকে কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ড গিয়ে কিছু দিন প্র্যাকটিস করলে দেখবেন খুব সহজ হয়ে গেছে। তাছাড়া গুগল, এবং ইন্টারনেটে ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে অনেক আর্টিকেল এবং ভিডিও পাবেন সেগুলো দেখতে পারেন। তাহলে আশা করি একটা ভাল ধারনা পাবেন।
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যেকোন ধরণের প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট শিখে সফলতার সাথে ফ্রিল্যান্সিং অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজগুলো করতে চান, তাহলে এই WordPress Theme & Plugin Customization Masterclass কোর্সটি হবে আপনার জন্য পারফেক্ট একটি কোর্স। বোনাস হিসাবে এই কোর্সের সাথে পাবেন ১৫০০ ডলার মূল্যের প্রিমিয়াম থিম এবং প্লাগিনের লাইফটাইম লাইসেন্স। যা ব্যাবহারে আপনি একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হিসাবে অন্য সবার কাছ থেকে বহুগুণে এগিয়ে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ্।

Masuk Sarker Batista is the founder & CEO of MSB Academy. This is the leading eLearning platform in Bangladesh that teaches more than 150,000+ students every single day. Also, he founded MSB Ask, MSB Jobs, MSB Cloud, and MSB Official platform. He also published many books on Amazon Kindle. At age under 20, he earns around $4000 per month online.
Masuk regularly writes on the blog for his readers & Loves to do affiliate marketing. He is also an Online Instructor & Serves Course For Over 170,000+ Students all over the world. His YouTube channel has 160k active subscribers. He loves Allah, his family, and loves people.