Blog

ফাইভার গিগ র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন বাড়িয়ে বেশি বেশি অর্ডার পাওয়ার ট্রিকস

fiverr gig ranking msb academy

অনলাইন থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করেন আর ফাইবার মার্কেটপ্লেস এর নাম জানে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। ফাইবার বর্তমান সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। যেখানে প্রতি মিনিটে হাজার হাজার মানুষ অনলাইন এর মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে নিচ্ছে এবং অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের স্কিল অনুযায়ী কাজ করে ডলার ইনকাম করে ক্যারিয়ার ডেভেলপ করছে।

ফাইবার মার্কেটপ্লেসে যারা কাজ করে তাদের সবচেয়ে বেশি চাওয়া থাকে তাদের গিগ যেন ভাল ভাবে রাঙ্ক করে এবং সব সময় প্রথম দিকে অবস্থান করে। একজন নতুন সেলার হিসেবে অবশ্যই আপনি আপনার গিগ র‍্যাংকিং করাতে চাইবেন। কারণ আপনার রেটিং যত বেশি হবে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ফাইবার গিগ কিভাবে র‍্যাংকিং এ নিয়ে আসবেন এবং ইম্প্রেশন বাড়িয়ে বেশি বেশি অর্ডার পাবেন  সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সাথে কিছু সুন্দর টিপস শেয়ার করব যা ফলো করলে আসা করি আপনাদের গিগ খুব দ্রুত র‍্যাংকিং করবে এবং আগের থেকে অর্ডার বেশি পাবেন। 

ফাইবার (Fiverr) কি?

ফাইবার হলো একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে মানুষ কোনো কাজের জন্য অন্য মানুষকে হায়ার করে থাকে কিংবা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কাজ করিয়ে নেয়। আপনি যদি অনলাইনে কোনো কাজে দক্ষ থাকেন তাহলে Fiverr.com এ জয়েন করে কাজ করার মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। যাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়ে থাকে। যেখানে দেশ বিদেশের বিভিন্ন বায়ার এবং সেলার কাজ করে। এখানে বলে রাখা ভাল, বায়ার বলা হয় তাদের যারা মূলত কাজ করিয়ে নেন, আর সেলার হল তারা যারা কাজ করেন।

গিগ (GIG) কি?

গিগ (Gig) হচ্ছে মূলত এক ধরণের সিভি। একজন ফ্রিল্যান্সার ফাইভারে তার সার্ভিস বিক্রির জন্য যে যে সুবিধা প্রদান করবে এবং বায়ারের প্রজেক্ট যতোদিনের মধ্যে সাবমিট করতে পারবে তার বিস্তারিত লিখা সম্বলিত পেজকে গিগ বলা হয়। আপনি কী ধরনের কাজ করবেন, তার ওপর নির্ভর করে আপনার গিগ সাজাতে হবে। মনে রাখবেন, একটা ভালো গিগ আপনার ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাই গিগ তৈরি করতে আপনাকে সময় দিতে হবে। তাড়াহুড়া করে গিগ তৈরি করতে যাবেন না। সময় নিয়ে সুন্দর করে গিগ তৈরি করতে হবে।

গিগ তৈরি করতে যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে

ফাইবারে গিগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই গিগ তৈরি করার সময় কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ মনে রাখবেন, একটি গিগ একটি বড় বিজনেস। এই গিগ একদিন আপনাকে প্রতি মাসে লাখ টাকা এনে দিতে পারে। আপনি যত বেশি সময় নিয়ে গবেষণা করে গিগ তৈরি করবেন ঠিক ততটুকুই আপনার আউটপুট আসবে। চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করবেন-

আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে আপনাকে নিচের এই বিষয় গুলার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে-

  • কম্পিটিটর এনালাইসিস
  • গিগের জন্য আকর্ষণীয় ইউনিক SEO ফ্রেন্ডলি টাইটেল তৈরি
  • ইউনিক ডেস্ক্রিপশন
  • গিগের প্যাকেজ
  • গিগের ট্যাগ
  • গিগের জন্য ছবি ( থাম্বনেইল)
  • গিগের জন্য ভিডিও
  • সুন্দর একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি

এখন জেনে নেয়া যাক কিভাবে এইসব বিষয় গুলো যত্নসহকারে তৈরি করলে র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন বাড়িয়ে বেশি অর্ডার পাবেন ~

কম্পিটিটর এনালাইসিস

একটি গিগ তৈরির আগে কম্পিটিটর এনালাইসিস করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথমে আপনাকে মার্কেট এর ডিমান্ড বুঝতে হবে। জানতে হবে আপনি যে সার্ভিস দিতে চাচ্ছেন সেই সার্ভিসে প্রথম পেইজে যারা রয়েছে, তারা কি কি বিষয় তাদের গিগে ম্যানশন করেছে । তারা কিভাবে টাইটেল তৈরি করেছে।

একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, ফাইভারের টপ পেইজে তারা আছে তার মানে অবশ্যই তারা এমন কিছু করেছে যার জন্য ফাইভার তাদের কে প্রথম পেইজের যোগ্য মনে করেছে এবং প্রথম পেইজে যায়গা দিয়েছে তাই এনালাইসিস করার সময় মনোযোগ দিয়ে সব কিছু লক্ষ্য করবেন। প্রত্যেকটি গিগ সময় নিয়ে দেখবেন তাদের টাইটেল লিখার স্টাইল, ডেস্ক্রিপশন ,গিগের প্যাকেজ, গিগের ট্যাগ সব কিছু মনোযোগ দিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে খাতা কলম নিয়ে বসবেন, প্রয়োজনীয় জিনিস বা লেখা নোট করে রাখবেন। সবকিছু ভাল ভাবে দেখা হলে সেখান থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের গিগের জন্য আপনার মত করে ইউনিক আইডিয়া তৈরি করবেন।

এখন নতুন যারা ফাইবারে কাজ করতে আসে তাদের অনেকেই জানেন না, কীভাবে কম্পিটিটর রিসার্চ করতে হয়। কম্পিটিটর রিসার্চ করার জন্য ফাইভারে সার্চবারে আপনার সার্ভিসের কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করবেন, যদি আপনার সার্ভিস হয় Digital Marketing তাহলে সার্চবারে Digital Marketing লিখে সার্চ করবেন৷ সার্চ করার জন্য আপনাকে Switch to buying এ ক্লিক করতে হবে।

আকর্ষণীয় গিগ টাইটেল

গিগের টাইটেল কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। টাইটেল হিসেবে আপনার মনগড়া টাইটেল দিলে ফাইবারে আপনার গিগ Ranking হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকবে। তাই SEO ফ্রেন্ডলি টাইটেল ব্যবহার করতে হবে। কারণ আগেই বলেছি আপনার গিগ টাইটেল যদি SEO ফ্রেন্ডলি না হয় তাহলে, ফাইভার সার্চ রেজাল্ট এ উপরে আসার সম্ভাবনা কম থাকবে। এই জন্য আপনাকে গিগ তৈরির আগে ভালো করে আপনার কিওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে হবে। আপনার গিগ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ এই জন্য করতে হবে যাতে করে, বাক্য অথবা শব্দ সার্চ করলে আপনার গিগ দেখায়।

এক্ষেত্রে আপনার সার্ভিসের Keyword টাইটেল এর প্রথম দিকে রাখুন। যেমন আপনার সার্ভিস যদি হয় ডিজিটাল মার্কেটিং এর তাহলে টাইটেল হতে পারে “I will be your full service digital marketing manager” আর অবশ্যই টাইটেলে কিছু আকর্ষণীয় শব্দ ব্যবহার করতে হবে যেন আপনার টাইটেল ক্লিকেবল হয়। অনেকেই গিগের টাইটেল অন্যের টা হুবহু কপি করে দিয়ে দেয় এটা একেবারেই করা যাবেনা। অন্যদের থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের মত করে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় টাইটেল ব্যবহার করবেন।

ইউনিক ডেসক্রিপশন

একটি গিগের ডেসক্রিপশন বা বর্ণনা গিগ র‍্যাংকিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই গিগ ডেসক্রিপশনে আপনাকে গিগ সম্পর্কে সব কিছু বিস্তারিত ভাবে লিখে দিতে হবে। ডেসক্রিপশন যদি ভাল না হয় এবং ক্লাইন্ড যদি পড়ে সহজে বুঝতে না পারে তাহলে আপনার হাত থেকে অনেক অর্ডার চলে যাবে। তাই আপনার গিগ ডেসক্রিপশনে আপনার সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সহজ ভাবে সবকিছু উপস্থাপন করতে হবে। ডেসক্রিপশনে কোন রকম কঠিন শব্দ ব্যবহার করবেন না। সহজ ভাষায় সহজ শব্দ ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন যাতে করে সবাই বুঝতে পারে। আর ডেসক্রিপশনে আপনার কাজের মেইন কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

গিগের সঠিক প্যাকেজ সেট করুন

গিগ র‍্যাংকিং এবং সহজেই অর্ডার পাওয়ার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গিগের প্যাকেজ অপ্টিমাইজ করা। আমরা যা করি আরও ৮-১০ টা গিগ যেমন তাদের প্যাকেজ লিখে ঠিক একইভাবে আমরা হুবহু প্যাকেজ লিখে ফেলি, এতে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই চেষ্টা করুন যতটুকু সম্ভব প্যাকেজ ইউনিক এবং এট্রাক্টিভ রাখার। ক্লায়েন্ট অনেক সময় সম্পুর্ন গিগের ডেস্ক্রিপশন না পড়ে শুধু প্যাকেজ দেখেই অর্ডার করে। অল্প কথা গুছিয়ে নিজের প্যাকেজটি এক্সপ্লেইন করার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজন হলে প্রথম-প্রথম কিছু দিন তুলনামূলক অল্প রেট এ কাজ করুন। যখন অনেকগুলো কাজ করবেন তখন আপনার দক্ষতা বাড়বে এরপর আপনি চাইলে আপনার সার্ভিস প্রাইস বাড়াতে পারবেন। তাই শুরুর দিকে খুব বেশি প্রাইস না দেয়া ভাল হবে। 

সঠিক ট্যাগ ব্যবহার

ট্যাগ ফাইবারে গিগ Rank করার পেছনে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। ফাইভার গিগে ট্যাগ মূলত SEO এর কাজ করে থাকে। সার্ভারের নিকট সার্চ রেজাল্ট প্রদর্শনের জন্য রোবট ট্যাগকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাই ট্যাগ ব্যবহারের সময় ট্যাগের মধ্যে অবশ্যই আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ড অ্যাড করবেন। গিগের ট্যাগ ভালো অপ্টিমাইজ করতে পারলে কিন্তু সার্চ রিজাল্টে উপরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি ধরনের ট্যাগ ব্যবহার করা উচিত? একটি বিষয় মাথায় রাখবেন ফাইবার কিন্তু irrelevant বা অপ্রাসঙ্গিক ট্যাগ রাখেনা বাদ দিয়ে দেয়। আপনি খেয়াল করে দেখবেন ৫ বা ৬ টি ট্যাগ দিলে অনেক সময় দু একটা বাদ দিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে সঠিক ট্যাগ সিলেক্ট করাটা গুরুত্বপূর্ণ।

ট্যাগ সিলেক্ট করতে আপনি ফাইভারের সার্চবার ব্যবহার করতে পারেন। ১০-২০ জন কম্পিটিটরদের ট্যাগ ভাল করে দেখুন। সেখান থেকে সবগুলো কপি করে বা নোট করে আপনার কাছে রাখতে পারেন এবং সেখান থেকে কেবল মাত্র আপনার সার্ভিসের সাথে হুবহু মিলে যায় সেইসব কিওয়ার্ড আলাদা করুন। তার পরে দেখুন সবচেয়ে কমন কিওয়ার্ড কি কি আছে যেগুলো কম্পিটিটররা বেশি ব্যবহার করছে। সেখান থেকে ফিল্টারিং করে আপনার পছন্দের ৫ টি ট্যাগ ব্যবহার করুন।

গিগের ছবি (থাম্বনেইল) ব্যবহার করুন

মানুষের প্রথম চোখের দেখায় যদি কিছু ভাল লাগে তাহলেই কিন্তু মানুষ সেখানে সময় নিয়ে আরও ভাল ভাবে দেখে। ফাইবারে কিন্তু এই বিষয়টি প্রযোজ্য। যে কোন বায়ার টাইটেল পড়ার পর গিগের ছবি দেখে দেখেন। যদি ছবি আর টাইটেল বায়ারকে আকৃষ্ট করতে পারে তাহলেই বায়ার সম্পূর্ণ প্রোফাইল দেখার জন্য আগ্রহ নিয়ে ক্লিক করে। গিগের ছবি যদি আকর্ষণীয় না হয় তাহলে ক্লিক এবং কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই মনে রাখতে হবে, একটি গিগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গিগের ছবি।

বায়ারকে আকৃষ্ট করে এমন ছবি ব্যবহার করুন। যদি আপনি নিজে ভালো মানের ডিজাইন তৈরি করতে না পারেন তাহলে প্রয়োজনে একজন ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার কে দিয়ে করিয়ে নিবেন যে সুন্দর ডিজাইন করতে পারে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে থাম্বনেইল এর কিওয়ার্ড অপ্টিমাইজেশন। আপনার সার্ভিসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন কিছু সুন্দর আকর্ষণীয় ওয়ার্ড ব্যবহার করুন। যা দেখে বায়ার আপনার গিগে ক্লিক করতে বাধ্য হবে।

গিগে ভিডিও অ্যাড করুন

ফাইভারের ভাষ্য মতে, একটি গিগে ভিডিও প্রায় ৬০- ৭০% সেল ইনক্রেইস করতে সহায়তা করে। অর্থাৎ আপনার গিগে যদি ভিডিও থাকে তাহলে, আপনি কাজ পেতে অন্যের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন। তাই অবশ্যই গিগে ছবির পাশাপাশি ভিডিও অ্যাড করবেন। ভিডিও শুধু অ্যাড করলে হবে না ভিডিওতে অবশ্যই কিছু বিষয় ভাল ভাবে অল্প সময়ে বর্ণনা করতে হবে। যেমন, নিজের সম্পর্কে বলবেন। আপনি কি কি সার্ভিস দিবেন সেটা সুন্দর করে বলবেন। অন্যদের থেকে আপনার এখানে বিশেষ কি কি সুবিধা পাবে সেটা বলবেন এবং ভিডিও শেষে সবাইকে অর্ডার দিতে বলবেন।

এখন আপনাকে যে ক্যামেরার সামনে এসে ভিডিও তৈরি করতে হবে আপনার ফেইস দেখিয়ে তা কিন্তু না, আপনি এখন চাইলে বিভিন্ন ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার দিয়ে After Effect এবং Video Animetion এর সাহায্য কিন্তু দুর্দান্ত ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। যদি নিজে তৈরি করতে না পারেন তাহলে, কারো সাহায্য নিন অথবা কাউকে হায়ার করে করিয়ে নিতে পারেন। তবে ফেইস দেখিয়ে তার সাথে অ্যানিমেশন অ্যাড করে ভিডিও তৈরি করলে সেটা বেশি চমৎকার হবে।

একটি সুন্দর পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি

একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট থাকলে বায়ার এর কাছ থেকে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। কারণ আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে বায়ারের কাছে আপনার আস্থার জায়গা বেশি থাকবে। এবং পেশাগতভাবে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেন। ওয়েবসাইটে আপনার কাজকে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। এবং ওয়েবসাইটে আপনার কাজের কিছু স্যাম্পল সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারবেন। বায়ার নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাছে কাজ আউটসোর্স করতে চায় না। তবে এই ক্ষেত্রে যদি আপনার যদি একটি সুন্দর এবং প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট থাকে, এবং আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে আপনার পোর্টফোলিওকে ভালোভাবে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ করে সাজাতে পারেন তবে শুরুর দিক থেকেই কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। আর এখন কোডিং বা প্রোগ্রামিং ছাড়াই কিছু ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন করে যে কোন ধরনের পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। 

উপরের এই বিষয় গুলা ছাড়াও আরও কিছু বিষয়ের দিকে আপনাকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমন-

নিয়মিত এক্টিভ থাকা

আপনি সব কিছু সুন্দরভাবে করে যদি নিয়মিত এক্টিভ না থাকেন তাহলে কোন কিছু কাজে আসবে না। কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। তাই নিয়মিত এক্টিভ থাকার মাধ্যমে আপনি গিগের ইম্প্রেশন বা গিগ র‍্যাংকিং ইম্প্রভের করতে পারেন। তাই যতটুকু সম্ভব হয় এক্টিভ থাকতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি ফাইভারের মোবাইল অ্যাপ ব্যাবহার করতে পারেন। তাহলে যেকোনো সময়ই কোন Buyer ম্যাসেজ দিলে ফাস্ট রেস্পন্স করতে পারবেন।

এছাড়া ফাইভারের নিজস্ব ফোরামে এক্টিভ থাকার চেষ্টা করবেন। ফাইভারের ফোরামে এক্টিভ থাকলে সেখান থেকে আপনি ভালো কিছু ইনফরমেশন পাবেন এবং আপডেট জিনিসগুলো জানতে পারবেন। তাই দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফাইভার ফোরামে এক্টিভ থাকার চেষ্টা করবেন।

বায়ার রিকোয়েস্ট পাঠান

নিয়মিত বায়ার রিকুয়েস্ট পাঠাবেন। তাহলে সম্ভাবনা বেশি থাকে বায়ার আপনার গিগ ভিজিট করার। আর এতে করে ক্লিক এবং ইম্প্রেশন দুইটাই বাড়বে। এতে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

কোয়ালিটি বজায় রাখা

বায়ার আপনাকে যে কাজ দিবে সেই কাজের কোয়ালিটি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা সবাই জানি, Fiverr একটি রেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। আপনার কাজের কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে বায়ার আপনাকে সেই রেটিং দিবে। এবং আপনার এই রেটিং যত ভাল হবে পরবর্তী কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। তাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ কাজ করে চেষ্টা করবেন 5 star Rating ধরে রাখার।

সময় মত ডেলিভারি

বায়ার যখন আপনাকে কোন অর্ডার দিবে তখন আপনি সেই অর্ডার এর জন্য একটি নিদিষ্ট সময় বায়ার কে দিবেন। যে সময় দিবেন চেষ্টা করবেন সেই সময়ের মধ্যে সুন্দর করে কাজটি কমপ্লিট করে সঠিক সময়ে ডেলিভারি করার। এতে করে ভবিষ্যতে এই বায়ার এর কাজ থেকে আরও অর্ডার পাবেন এবং বায়ার খুশি হয়ে আপনাকে একটি ৫ স্টার রেটিং বা রিভিউ দিবে। আর এতে করে আপনার গিগের ইম্প্রেশন খুব বেশি এবং দ্রুত বাড়বে।

সোশ্যাল শেয়ার

সোশ্যাল শেয়ার হল আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার গিগ বেশি করে শেয়ার করা। এটি করে শুরুতে হয়ত আপনি খুব বেশি উপকার পাবেন না তবে গিগের পারফরম্যান্স কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। যদি নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে টার্গেটেড ক্লায়েন্ট নিয়ে আসতে পারেন তখন গিগ সোশিয়াল মিডিয়া শেয়ারে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। তাই বেশি করে নিজের কাজের এক্টিভিটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। আর একটি কথা মনে রাখতে হবে,অবশ্যই নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করবেন। কোন সেলিব্রিটি এর কমেন্টে কিংবা কোন পেইজের কমেন্টে শেয়ার করবেন না।

আশা করি এই আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে বুঝতে পেরছেন। কিভাবে কাজ করলে এবং কোন বিষয় গুলার দিকে নজর দিলে গিগ র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন বাড়িয়ে বেশি বেশি অর্ডার পাওয়া যাবে। এখন আপনি যদি এই সম্পূর্ণ বিষয়টি আরও সুন্দর ভাবে হাতে কলমে শিখতে চান তাহলে জয়েন করতে পারেন আমাদের Ultimate Fiverr Success: Boost Sales & Build Career In Online এই কোর্সে। এই কোর্সে বর্তমানে প্রচুর চাহিদা আছে, এমন ১৮টি ভিন্ন ভিন্ন কাজ হাতে-কলমে শিখানো হয়েছে + Fiverr-এ অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে, কিভাবে সফলতার সাথে ফ্রীলেন্সিং করবেন তার A to Z গাইডলাইন পাবেন এই কোর্সে। সাথে রয়েছে লাইফ টাইম কোর্স এক্সেস + লাইফ টাইম সাপোর্ট এবং ফ্রি কোর্স আপডেট।

পরিশেষে একটি কথা, বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে, তাই সবার মাঝখান থেকে বায়ার খুঁজে কাজ পেতে আপনাকে সবার থেকে বেশি এক্সপার্ট হতে হবে এবং টেকনিক জানতে হবে। তাই যারা নতুন অবস্থায় শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আশা করি আমাদের ফাইবার সাকসেস কোর্সটি বেশ সহায়ক হবে।

Leave a Reply