Blog

নেক্সট ১০ বছরে কোন স্কিলগুলো টিকে থাকবে?

আমার মনে হয় নেক্সট ১০ বছরে টেকনোলজি জগতে বিশাল একটা পরিবর্তন আসবে। ২০১২-১৩ সালে আমি নরমাল HTML এর সাইট বিক্রি করে ৪০০-৫০০ ডলার কামাইতাম। এরপর আসলো জুমলা, জুমলাকে খেয়ে দিলো ওয়ার্ডপ্রেস। এখন ওয়ার্ডপ্রেসকে টেক্কা দিতে মার্কেটে এসেছে উইক্স, ওয়েবফ্লোর মত কিছু কোম্পানি। আমি এক সময় ম্যাজেন্টোতে ই-কমার্স সাইট বানাইতাম কয়েক বছর পর দেখলাম WooCommerce যাকে আমরা কোন দামই দিতাম না সে ম্যাজেন্টোকে খেয়ে দিলো!!!

এইবার আসুন ল্যাংগুয়েজ। আমি যখন প্রগ্রামিং শিখি তখন. Net এর মার্কেট ছিলো তুংগে। এর পর তখন তুলনামূলক নতুন ল্যাংগুয়েজ আসলো PHP আমরা যারা তখন PHP শিখি তখন আমাদের দরিদ্র ডেভলপার বলা হইত। এর পর কয়েকবছরের ভিতর আমরা হয়ে গেলাম হিরো। মানে PHP এর ডেভলপারের জয় জয়কার। কিন্তু এখন কেনো যেনো মনে হচ্ছে পাইথন আর MERN ডেভলপার রা নেক্সট ৫-১০ বছর পর হিরো হবে।

এরপর আসুন টেকনোলজি। আমাদের আমলে ওয়েব ডেভলপার মানে ভালো প্রফেশন। ওয়েব এপ মানে ওয়েব ভিত্তিক বিভিন্ন সফটওয়্যার যেমন একাউন্টিং সফটওয়্যার ডেভলপার মানে তো বিশাল ব্যাপার। আর মোবাইল এপ ডেভলপাররাতো এলিট শ্রেনীর লোক। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে নেক্সট ১০ বছরে মেশিন লার্নিং, ডেইটা এনালাইটিক্স, ব্লকচেইন ডেভলপার রা হবে এলিট শ্রেনীর। এছাড়া অটোমেশন এর সাথে জড়িত টেকনোলজি গুলো হবে হাই ডিমান্ডিং ফিল্ড।

এরপর আসুন সার্ভারে। আমাদের সময় ওয়েব ডেভলপাররাই সার্ভারে সিপ্যানেলে ফাইল আপলোড করে ডেপ্লয় করতো। পরে আসলো গিট ও গিঠাব, গিট বাকেট ইত্যাদি। এখন ডেভলপার রা সরাসরি ডেপ্লয় করেনা। নতুন প্রফেশন আসলো, নাম হইল DevOps। এইটা আগামীতে চরম ডিমান্ডিং একটা ফিল্ড হবে।

এর পর আসেন ইনফ্রাসটাকচার ইঞ্জিনিয়ার। আপনি যদি লিনাক্স জানেন আর যেকোন একটা ক্লাউড সিস্টেম পুরোপুরি জানেন লাইক আজুর বা AWS তাহলে আপনার নেক্সট ১০ বছর ভাত এর অভাব হবেনা। অনেকক্ষন প্যাচাল পারলাম টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে।

এইবার আসুন ডিজাইনে। আচ্ছা যদি একটা মার্সিটিজ গাড়ীতে যা যা কমফোর্ট থাকার কথা যা যা কাটিং এজ টকনোলজি থাকার কথা তা সব যদি থাকে শুধু গাড়ীটার কালার মরিচা পড়া আর মার্সিটিজ লোগো থাকবেনা তাহলে কি আপনি গাড়িটা কিনবেন? ৯৯% উত্তর আসবে না। তাহলে কি দাড়ালো দেখতে ভালো না লাগলে টেকনোলজির দাম নাই। মানে সায়েন্সের সাথে আর্ট না থাকলে সেটির দাম নাই। আর এইখানেই আপনার মার্কেট। আপনি যদি ভালো ডিজাইনার হিয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভাতের অভাব কিয়ামত পর্যন্ত হবেনা। আপনি যদি নিচের যে কোন একটা স্কিল শিখে ফেলতে পারেন তাহলে কোন চিন্তা নাই।

এরপর আসুন মার্কেটিং-এ!! ওয়েবসাইট বা অ্যাপ বানান অথবা ডিজাইন, সব কিছুই কিন্তু করা হয় বিক্রির উদ্দেশে। আপনি যদি হিউম্যান সাইক্লোজি ভালো বুঝেন এবং বর্তমান বিভিন্ন মার্কেটিং টুলের ইউজ বুঝেন তাহলে আপাতত আপনার ভাতের অভাব হবেনা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, SEO ইত্যাদি সবকিছুই কিন্তু আসলে মার্কেটিং এর ভিতরেই পড়ে। আর প্রযুক্তির এই যুগে আমরা অনলাইন আমাদের মোবাইল এবং ল্যাপটপের স্ক্রিনে যা দেখছি তার পিছনে রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অবদান।

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। যেকোনো কিছু অনলাইনে প্রচার এবং সেল বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নাই। বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটিরও বেশী মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে কানেক্টেড এবং এই সংখ্যাগুলো আগামী ৫-১০ বছরে দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণতর হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আপনার বিজনেস অনলাইনে হোক কিংবা অফলাইনে, অথবা আপনি যদি মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসাবে লোকালি কিংবা গ্লোবালি সার্ভিস দিতে চান তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নাই। এখন সবকিছু ডিজিটাল হওয়ার কারনের বড় প্রতিষ্ঠানগুলা তাদের পণ্যের বা সার্ভিসের মার্কেটিং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলাতে করে থাকে। সেদিক থেকে বলা যায় ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি সম্ভবনাময় সেক্টর। ডিজিটাল মার্কেটিং কিন্তু একক কোন ক্ষেত্র নয়। বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেল বা মাধ্যমে কোন প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালান একজন ডিজিটাল মার্কেটার। যেমনঃ

  • সোশ্যাল মিডিয়া (Facebook, Instagram, Twitter)
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • ইউটিউবে ভিডিও মার্কেটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন (SEO)
  • মোবাইল অ্যাপ স্টোর
  • ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম
  • বিভিন্ন প্লাটফর্মে ফ্রি অ্যান্ড পেইড মার্কেটিং

এখন সবাই কিন্তু সব সেক্টরে কাজ করে না। ব্যক্তিগত আগ্রহ, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আর প্রয়োজনসাপেক্ষে একজন ডিজিটাল মার্কেটার সব ডিজিটাল মাধ্যম বা নির্বাচিত কয়েকটি মাধ্যম নিয়ে কাজ করে নিজের ক্যারিয়ার গড়েন। ক্যারিয়ার হিসাবে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরটি কেমন? এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন। আর যদি প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে এই ইন্টারনেট দুনিয়ায় রাজত্ব করতে চান তাহলে জয়েন করতে পারেন MSB Academy-এর All In One Digital Marketing Masterclass (14 Courses In 1) কোর্সটিতে। কোর্সটি কমপ্লিট করলে ১৪টির বেশি মার্কেটিং সেক্টরে এক্সপার্ট হয়ে আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন।

নেক্সট ১০ বছরে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের ভবিষ্যৎও কিন্তু উজ্জ্বল। প্রযুক্তির বিকাশের কল্যাণে বিশ্ব-বাণিজ্য এখন অনলাইনের দিকে ঝুকে পড়ছে। আমরা বিজনেস করতে গেলে সবার আগে যা চিন্তা করি, সেটা হল ইনভেস্ট বা পুঁজি। এই ইনভেস্ট বা পুজি ছাড়া বর্তমান সময়ে ঘরে বসে কেউ যদি ইনকাম করতে চায়, তার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল বিশাল একটি সুযোগ। ধরুন আপনার কোন প্রোডাক্ট আছে, আমি আপনার প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন করে আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করলাম। এখন আপনি আমাকে এজন্য কমিশন দিবেন। এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অন্যের পণ্য বিক্রি করে টাকা আয়। আর সব বড় বড় অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানিরই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থাকে। আর অনলাইনে এই কাজটি করা অনেক বেশিই সহজ। কারণ যত বেশি মানুষ আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক থেকে কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনবে, প্রতি ক্ষেত্রে আপনি কমিশন পাবেন। Passive Income করার ক্ষেত্রে তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রুভেন এবং খুবই সম্ভবনাময় একটা মাধ্যম। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

এখন অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অনেক সেক্টর রয়েছে প্রোগ্রামিং, এডিটিং, ডিজাইনিং, সাইবার সিকুরিটি, মার্কেটিং ইত্যাদি। এর মধ্যে থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনি আসলে কোন সেক্টরে কাজ করতে চান? কোন সেক্টরটি আপনার বেশি ভাল লাগে? তবে যেই সেক্টরেই কাজ করেন না কেন, অবশ্যই সম্পূর্ণ প্যাশন নিয়ে কাজ করতে হবে। স্কিল অর্জনের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় রয়েছে সে বিষয়গুলা আপনার নিজের মধ্যে থাকলে হবে। যেমন, সময় উপযুগি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে সর্বদা নিজেকে আপডেট থাকা। মার্কেটপ্লেসে কখন কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং টেকনোলজি কোন দিকে যাচ্ছে তার সাথেও নিজেকে আপডেট রাখতে হবে।

আর এখন আপনি যদি বাংলায় আন্তর্জাতিক মানের কোর্স করার মাধ্যমে নিজেকে স্কিলফুল হিসাবে গড়ে তুলতে চান তাহলে MSB Academy-এর বেস্টসেলিং কোর্সগুলো চেক করতে পারেন আর জয়েন করে ফেলতে পারেন আপনার পছন্দের কোর্সটিতে। কোর্সে জয়েন করলেই পাবেন Lifetime Access, ইন্সট্রাক্টর সাপোর্ট এবং ভবিষ্যতে কোর্সে কোন আপডেট আসলে সেইসব আপডেট সব সময় ফ্রিতে পাবেন। বাংলাদেশের হাজারো স্টুডেন্ট এই প্লাটফর্মের কোর্সগুলো করে যে যার কর্মক্ষেত্রে সফলভাবে কাজ করছে। এই লিঙ্কে ভিজিট করলেই আপনি আমাদের স্টুডেন্টদের সাকসেস স্টোরি দেখতে পারবেন।

Comments

  • User Avatar
    Tarek Rahman
    July 30, 2022

    অনেক চমৎকার একটি আর্টিকেল। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সময় উপযোগী। ধন্যবাদ এত সুন্দর করে বুঝিয়ে বলার জন্য। এখন থেকে চেষ্টা করব এই স্কিল গুলা অর্জন করতে।

  • User Avatar
    azmir haq
    July 30, 2022

    লেখার পাশাপাশি অডিও পডকাস্ট করে বলা হয়েছে। ব্যাপারটা সত্যি ভাল লেগেছে। ব্লগ এবং পডকাস্ট দুইটি খুবই চমৎকার হয়েছে।

  • User Avatar
    MrRasel
    August 27, 2023

    What a nice article!

Leave a Reply