Blog

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসে সফল হতে এই ১০টি ভুল এড়িয়ে চলবেন

print on demand bangla

অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম করার যে কয়টি মাধ্যমে রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস যাকে সংক্ষেপে বলা হয় (POD)। আপনি যদি সঠিক গাইডলাইন মেনে প্রফেশনাল ভাবে কাজ শিখে এই বিজনেস করতে পারেন তাহলে, সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এই সেক্টরে। কিন্তু যারা এই সেক্টরে যারা নতুন অবস্থায় কাজ করতে আসে তারা বেশ কিছু ভুল করে থাকে। আর যার কারণে তারা খুব বেশি সফল হতে পারে না। আজকের এই আর্টিকেলে মূলত সেই রকম ১০টি ভুল নিয়ে আলোচনা করব। এই ভুল গুলা যদি আপনি এড়িয়ে চলতে পারেন তাহলে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসে আপনি সফল হতে পারবেন খুব সহজে।

প্রিন্ট অন ডিমান্ড কি?

Print on Demand কে সংক্ষেপে POD বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন পণ্য যেমন টি-শার্ট, মগ, বই, ক্যানভাস ইত্যাদি এর উপর প্রোডাক্ট ডিজাইন করে বিভিন্ন প্রিন্ট অন ডিমান্ড মার্কেটপ্লেস গুলোতে সেল করাকেই বলে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস আপনি শুধুমাত্র ডিজানই করে প্রোডাক্টটি সাইটে একটা প্রাইস সেট করে অ্যাড করে রাখবেন, আর কোন কাস্টমারের অর্ডার করলে আপনি যেই মার্কেটে কাজ করবেন তারাই আপনার হয়ে প্রোডাক্টটি প্রিন্ট করে শিপ করে দিবে প্রোডাক্টটি কাস্টমারের কাছে। প্রোডাক্ট তৈরির খরচ বাদ দিয়ে বাকি যা থাকবে সেটাই হবে আপনার প্রফিট। এর মানে আপনার কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র ভালো ভালো ডিজাইন করা এবং মার্কেটিং করে সেল করা।

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস বলতে আমরা অনেকেই শুধু অ্যামাজন কে বুঝে থাকি। কিন্তু অ্যামাজন ছাড়াও পপুলার অনেক প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাইট আছে। চলুন জেনে নেই ওয়ার্ল্ডের কিছু পপুলার Print-on-Demand প্লাটফর্মগুলোর নাম –

  • TeeSpring
  • Redbubble
  • ViralStyle
  • Printful
  • Printify
  • Threadless
  • T-Pop
  • SPOD
  • Apliiq Dropship
  • Teelaunch
  • CustomCat
  • Printbase

আপনি উপরের প্ল্যাটফর্মগুলা ভিজিট করলে বুঝতে পাবেন প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস কতটা পপুলার এবং লাভজনক বিজনেস। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আপনি আপনার ডিজাইনগুলো একাধিক প্লাটফর্মে আপলোড করে একাধিক প্লাটফর্ম থেকেই আলাদাভাবে ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেকেই এই প্লাটফর্মগুলাতে কাজ করে ইনকাম করছে।

আমাদের MSB Academy তে কিন্তু প্রিন্ট অন ডিমান্ড নিয়ে প্রফেশনাল একটি কোর্সও রয়েছে। জনপ্রিয় প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাইটগুলতে ক্রিয়েটিভ টিশার্ট ডিজাইন সেল করে কিভাবে প্যাসিভ ইনকাম করা যায় সেই ব্যাপারে কমপ্লিট গাইডলাইন দেয়া হয়েছে এই কোর্সে। এছাড়া ফ্রি এবং পেইড মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার ইনকামকে নেক্সট লেভেলে নিয়ে যাওয়ার সিক্রেট ফর্মুলাও শেয়ার করা হয়েছে। ৩০০০+ স্টুডেন্ট এই কোর্সটিতে জয়েন করেছে এবং তারা প্রিন্ট অন ডিমান্ড এর বিভিন্ন সাইটে কাজ করে ইনকাম করছে। আপনার যদি আগ্রহ থাকে প্রিন্ট অন ডিমান্ড মার্কেটপ্লেসে কাজ করে ক্যারিয়ার গড়ার তাহলে জয়েন হতে পারেন কোর্সটিতে।

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসের ১০ টি কমন ভুল

আসলে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস শুরু করতে কোন ধরনের ইনভেস্টমেন্ট লাগে না। খুব বেশি সময়ও লাগে না। যদি ডিজাইন স্কিল ভাল থাকে তাহলে যে কেউ  শুরু করে দিতে পারে। এই জন্য নতুন অনেকেই বুঝে না বুঝে এই বিজনেস শুরু করে দেয়। শুরুর দিকে হয়ত অনেকে খুব বেশি সাকসেস হয় না, আবার অনেকেই কয়েক মাস কাজ করার পর মনের মত ইনকাম করতে না পেরে কাজ বন্ধ করে দেয়। সম্ভাবনাময় এই সেক্টরে নতুন যারা আসে তারা কিছু কমন ভুলের জন্য লং টাইম টিকে থাকতে পারে না। তেমনি কিছু কমন ভুলের কথা আজকের এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে। এই ভুল গুলা এড়িয়ে চলতে পারলে সহজে সফল হতে পারবেন এই প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসে।  এবার চলুন জেনে নেয়া যাক ভুলগুলো কি –

১) সঠিক রিসার্চ ও প্লানিং না করা 

পরিকল্পনা বিহীন কোন কাজে সফলতা আসে না। কোন কাজে সফল হতে হলে তার একটি সুন্দর পরিকল্পনার প্রয়োজন হয় এবং সেই কাজ সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা থাকতে হয়। যে কোন কাজ শুরু করার আগে সেটি নিয়ে রিসার্চ করা এবং সঠিক প্লানিং করা খুবই গুরুতুপূর্ণ। আপনি একটু সময় ব্যয় করলে আর কিছুটা এফোর্ট দিলেই বর্তমান মার্কেট সম্পর্কে প্রচুর তথ্য পাবেন। আর মার্কট রিসার্চ বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। এতে করে আপনি আপনার গ্যাপ গুলো, কিংবা কম্পিটিটরদের গ্যাপ গুলো আইডেন্টিফাই করতে পারবেন। আর আপনার POD বিজনেস এ সেগুলো Apply করতে পারবেন। তাই সঠিক রিসার্চ ও প্লানিং করা না করতে পারলে একটা সময় অসংখ্য বিজনেসের আড়ালে হারিয়ে যাবেন।

২) নিম্নমানের ডিজাইন কোয়ালিটি

যে কোন বিজনেস এর জন্য কোয়ালিটি খুবই গুরুতুপূর্ণ একটি বিষয়। আর বর্তমানে কিন্তু সকল সেক্টরে প্রচুর প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতার মার্কেটে টিকে থাকতে হলে আপনাকে অন্য সবার থেকে বেস্ট কোয়ালিটির পণ্য দিতে হবে। ডিজাইনের গুনগত মান আপনার প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড বিজনেসের দ্রুত সাফল্যের মূল হাতিয়ার। কাস্টমাররা আকর্ষণীয় এবং ইফেক্টিভ এমন সব ডিজাইন বেশি পছন্দ করেন। নিম্ন-মানের গ্রাফিক্স ব্যবহার করা, পুরানো বা কম আকর্ষণীয় ফন্ট ব্যবহার করা বা খারাপভাবে এডিট করা ডিজাইনগুলি আপনার ব্র্যান্ডের ক্ষতি করতে পারে।

তাই ডিজাইনের উপর বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে আপনার ডিজাইন স্কিল আরও বাড়ান। ডিজাইনের মধ্যে আকর্ষণীয়তা নিয়ে আসুন। মনে রাখবেন, একটি ভাল-মানের ডিজাইন আপনার ব্র্যান্ডকে উন্নত করতে পারে এবং গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারে। যা আপনার বিজনেস এর দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যে অবদান রাখবে, এবং ইনকাম অনেক গুন বাড়িয়ে দিবে।

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস এর জন্য যদি আপনি প্রফেশনাল মানের টিশার্ট ডিজাইন সহ অন্যান্য আরও ডিজাইন শিখতে চান তাহলে আমাদের Basic To Advanced T-Shirt Design Masterclass In Bangla এই কোর্সটি করতে পারেন। কোর্সে Adobe Photoshop & Illustrator-এর মাধ্যমে টি-শার্ট ডিজাইনের বেসিক থেকে অ্যাডভান্সড সব টাইপের ডিজাইন শিখনো হয়েছে।প্রিন্ট অন ডিমান্ড সহ বিভিন্ন Microstock সাইটে কিভাবে ডিজাইন আপলোড করে ইনকাম করবেন সে বিষয়েও কোর্সের মধ্যে গাইডলাইন দেয়া হয়েছে।

৩) লিমিটেড প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা

যে কোন বিজনেস বড় করতে হলে আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট বাড়াতে হবে। প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসও তার ব্যাতিক্রম নয়। আপনি যদি মার্কেট এর ট্রেন্ড বুঝে ডিজাইন তৈরি করতে পারেন তাহলে অন্য সবার থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন, এবং আপনার সেল অনেক গুন বেড়ে যাবে। এই জন্য আপনাকে সঠিক নিশ খুঁজে বের করতে হবে। ডিজাইন করার সময় যদি এমন ডিজাইন করা যায়, যেটি ওই সময়ে মার্কেটের ট্রেন্ডিং-এ রয়েছ তাহলে সেখান থেকে ভাল একটা প্রফিট করে ফেলা যায় সহজেই। কিন্তু আপনি যদি শুধু কিছু লিমিট প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন তাহলে সেখানে সফল হওয়ার সম্ভাবনা এবং মার্কেটে লং টাইম টিকে থাকা বেশ কঠিন হয়ে যাবে।

যেমন আপনার যদি একটি টি-শার্টের বিজনেস থাকে তাহলে, এর বাইরে আরও অন্য প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার কথা চিন্তা করুন। হুডি, মগ, ফোন কেস বা বাড়ির সাজসজ্জার আইটেমগুলির মতো পণ্যগুলি বিজনেসে অ্যাড করতে পারেন। তাহলে আপনি বিভিন্ন গ্রাহকের ডিমান্ড পূরণ করতে পারবেন এবং নিজেই মার্কেটপ্লেসের একটি বড় অংশ দখল করতে পারবেন। যা আপনার বিজনেস কে আরও প্রসারিত করবে এবং ইনকাম অনেক বাড়িয়ে দিবে।

৪) দুর্বল কাস্টমার সার্ভিস ব্যবস্থা

দুর্বল কাস্টমার সার্ভিস ব্যবস্থা যে কোন বিজনেসের জন্য হুমকি স্বরূপ। কারণ কোন বিজনেস এর মূল হল কাস্টমার। কাস্টমার সার্ভিস যে কোন ব্যবসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড বিজনেসের জন্যও এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ । তাই কাস্টমার সার্ভিস যদি সুন্দর এবং সঠিকভাবে না দেয়া যায় তাহলে, নেতিবাচক ইফেক্ট আপনার বিজনেসে পরবে। এমনকি কাস্টমার হারানোর মত সিচুয়েশন হতে পারে।

তাই যত দ্রুত সম্ভব কাস্টমারদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আন্তরিকতা এবং পেশাদারিত্বের সাথে সমস্যার সমাধান সমাধান করতে হবে। এবং আপনার কাস্টমার দের জন্য একটি স্মুথ ও সহজ শপিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তুললে এবং আন্তরিক কাস্টমার সার্ভিস প্রদান করলে তারা আরও বেশি উৎসাহিত হয়। মোট কথা, আপনার ব্যবসার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যকে বাড়িয়ে তুলবে। তাই দুর্বল কাস্টমার সার্ভিস ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ রূপে বেরিয়ে আসতে হবে।

৫) ভুল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি

আপনি যত ভাল কাজই করেন না কেন, সেটি যদি আপনি মার্কেটিং না করে নিজের কাছে রাখেন তাহলে সেখান থেকে কোন টাকা আসবে না। প্রিন্ট অন ডিমান্ড প্লাটফর্মে সঠিক Keyword Research করে ভালো ডিজাইন আপলোড করলে কম বেশি সেল আসবে কিন্তু সফলভাবে এই বিজনেসটাকে রান করতে আপনার অবশ্যই মার্কেটিং করতে হবে। আপনি যত আকর্ষণীয় ডিজাইন করেন না কেন প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড বিজনেসে সঠিক মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ছাড়া success হওয়া সম্ভব না। অনেকেই ধারণা করেন কাস্টমার স্বাভাবিকভাবেই তাদের পণ্যগুলি খুঁজে পাবেন। কিন্তু এটা একদমই ভুল ধারণা।

marketing mistakes

ফ্রি মার্কেটিং অ্যান্ড পেইড মার্কেটিং চাইলে উভয়ভাবেই মার্কেটিং করতে পারেন। ফ্রি মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে রেজাল্ট একটু দেরিতে আসে, আর পেইড মার্কেটিং সঠিকভাবে করতে পারলে ফাস্ট রেজাল্ট দেখা যায়। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন, ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম এই সকল জাগায় মার্কেটিং করতে পারেন। পেইড মার্কেটিং এর জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হল ফেসবুক অ্যাড। তবে শুরুতে যদি আপনার বাজেট কম থাকে তাহলে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম আইডি থেকে মার্কেটিং করতে পারেন। মনে রাখতে হবে প্রচারেই প্রসার। তাই প্রচার খুবই ভাল ভাবে করতে হবে। কারন সঠিক মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ছাড়া সফলতা অর্জন করতে এবং রেগুলার প্রোফিট করতে বেশ সংগ্রাম করতে হবে।

ফেসবুক এখন সবচেয়ে বড় ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস। পেইড মার্কেটিং এর ফেসবুক এখন বিশাল একটি মাধ্যম। কিন্তু সঠিক নিয়ম না জেনে শুধু ডলার খরচ করলে ত আর মার্কেটিং হবে না। টার্গেট অডিয়েন্স সিলেক্ট করে ফেসবুকে যদি আপনি অ্যাড রান করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে ১ ডলার খরচ করে ৮ থেকে ১০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক এর সঠিক মার্কেটিং কৌশল জানতে আপনি আমাদের Facebook Marketing কোর্সটি করতে পারেন। ফ্রি এবং পেইড দুই মেথডে ফেসবুক মার্কেটিং এর A TO Z শিখে যাবেন এই কোর্সটি ভাল ভাবে কমপ্লিট করলে।

৬) এসইও এবং কীওয়ার্ড গুরুত্ব না দেওয়া

কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো এক ধরণের গবেষণা বা অনুসন্ধান, যার মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেট কাস্টমার কে খুঁজে বের করবেন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা (SEO) কে প্রায়ই অনেকই প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড বিজনেস এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয় না। SEO কে গুরুত্ব না দেয়ার অর্থ হল অর্গানিক ট্র্যাফিক এবং গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনে visibility হারিয়ে ফেলা। এসইও এর প্রথম পদক্ষেপই হলো কীওয়ার্ড রিসার্চ। অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট মানুষ কি কি নামে বিভিন্ন সার্চইঞ্জিনে সার্চ দিলে পাবে সেটা ঠিক ভাবে দিতে হবে। এবং মানুষ প্রিন্ট অন ডিমান্ড এর প্রোডাক্ট গুলা কি নামে বেশি সার্চ করে সেটাও আপনাকে রিসার্চ করতে হবে।

এর পাশাপাশি ওয়েবসাইটের স্পীড ভাল রাখার জন্য এবং মোবাইল-ফ্রেন্ডলি করার জন্য জন্য আপনার ওয়েবসাইট অপটিমাইজ করতে হবে। কারণ এই বিষয় গুলি সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিংকে প্রভাবিত করে। তাই অরগানিক ট্রাফিক এবং সেল বাড়াতে এসইও এবং কীওয়ার্ড রিসার্চকে কোন ভাবে অবহেলা করা যাবে না।

৭) বাজে প্রিন্টিং কোয়ালিটি এবং মানহীন প্রোডাক্ট সিলেকশন

প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড বিজনেসে প্রিন্টেড প্রোডাক্ট গুলোর গুণমানের উপর বিজনেস এর সফলতা নির্ভর করে। খারাপ প্রিন্টিং কোয়ালিটি, যেমন কালারলেস বা মিসলাইনড ডিজাইনের ফলে গ্রাহকরা অসন্তুষ্ট হতে পারে এবং নেতিবাচক রিভিউ দিতে পারে। তাই প্রিন্টিং কোয়ালিটি বজায় রাখার এবং ভাল মানের প্রিন্ট নিশ্চিত করার জন্য নামকরা এবং নির্ভরযোগ্য প্রিন্টিং কোম্পানিগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখবেন এবং সেখান থেকে প্রিন্টিং করাবেন। প্রিন্ট করার জন্য পণ্য নির্বাচন করার সময়ও সতর্ক থাকতে হবে। টেকসই এবং পরতে বা ব্যবহারে আরামদায়ক ভাল-মানের পণ্য বেছে নিন, এবং গ্রাহকদের কাছে ডেলিভারি করার আগে পণ্যের নমুনাগুলি পরীক্ষা করে নিন।

৮) সময় মত অর্ডার ডেলিভারি না করা

কাস্টমার প্রোডাক্ট অর্ডার করার পর অবশ্যই নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্ডার ডেলিভারি করতে হবে। অর্ডার সঠিকভাবে, সঠিক সময়ের মধ্যে পূরণ করতে ব্যর্থ হলে বা বিলম্ব হলে শুরুতেই কাস্টমার বাজে অভিজ্ঞতার শিকার হবে। এতে কাস্টমার আপনার ব্র্যান্ড এর প্রতি শুরুতে নেতিবাচক ধারণা করে ফেলবে। তাই আপনার প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড প্রোভাইডারের সাথে একত্রিত হয়ে, দ্রুত যোগাযোগ, ফাস্ট ডেলিভারি ও পুরো প্রোজেক্ট কমপ্লিট করার প্রক্রিয়াটি সময়ের মধ্যে যেন হয়ে যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

আপনার কাস্টমারের সাথে সহজে যোগাযোগের মাধ্যেম তৈরি করুন। অর্ডার আপডেট দিতে থাকুন এবং যেকোনো সমস্যার সাথে সাথে সমাধান করার চেষ্টা করুন। একটি কথা মনে রাখবেন নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্ডার কমপ্লিট করতে পারলে শুধুমাত্র কাস্টমার খুশি হয় না এতে করে কাস্টমারের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি হয় আস্থা অর্জন হয়।

৯) ব্র্যান্ডিং-এ গুরুত্ব না দেয়া

ব্র্যান্ড বলতে আমরা কোনো একটি নির্দিষ্ট পণ্য, লগো, প্রতীক, নাম ইত্যাদিকে বুঝে থাকি। ব্র্যান্ড হচ্ছে এমন কিছু যা বাজারের আর দশটা জিনিস থেকে আপনার জিনিসকে আলাদা ভাবে তুলে ধরবে। POD বিজনেসে ব্র্যান্ডিং এ অনেকেই কম মনোযোগ দেয়। প্রায় সব বিগনাররা এই ভুলটি করে থাকেন। প্রচারণায় পর্যাপ্ত অর্থ ও সময় ব্যায় করতে চায় না। ফলে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয় না। রেগুলার ছোট বিজনেস থেকে ব্রান্ড হয়ে ওঠার জন্য আপনার বিজনেস লোগো, ওয়েবসাইট ডিজাইন, প্যাকেজিং ইত্যাদির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

সব কিছুতে ব্র্যান্ডিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। ব্র্যান্ডকে শক্তিশালী করে তুলুন এবং কাস্টমারের বিশ্বাস ও আস্থার জাগায় নিয়ে যান আপনার ব্র্যান্ডকে।

১০) নিজেকে আপডেট না করা ও নতুন কিছু না শিখা

প্রযুক্তির এই সময়ে কোন কিছু এক জাগায় স্থির থাকে না। প্রতিদিন প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে, নতুন আপডেট আসছে , নতুন জিনিস অ্যাড হচ্ছে। প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড মার্কেটপ্লেস সর্বদা আপডেট হয়। মার্কেট ট্রেন্ড সম্পর্কে আপনাকে আপডেট থাকতে হবে। তাই সময়ের সাথে যদি নতুন স্কিল অর্জন না করে একজায়গায় স্থির থাকেন তাহলে সেটা আপনার বিজনেসের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ধারাবে। পরিবর্তনকে ডিফেন্ড করা এবং নতুনকে গ্রহণ না করার প্রবণতা ও প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়া। নতুন নতুন কৌশল, প্ল্যাটফর্ম এবং পণ্য অফার নিয়ে পরীক্ষা করুন। ডাটা বিশ্লেষণ করুন। শেখা ইচ্ছা এবং উন্নত মানসিকতা গড়ে তুলুন।

এখন আপনার যদি নতুন কিছু শিখার ইচ্ছা থাকে তাহলে আমাদের MSB Academy থেকে নতুন স্কিল অর্জন করার জন্য আপনার পছন্দ মত কোর্স করতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, টিশার্ট ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ফেসবুক মার্কেটিং, কাটুন অ্যানিমেশন সহ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের অনেক প্রফেশনাল মানের কোর্স রয়েছে। এছাড়াও আপডেট সব কিছু  জানার জন্য আমাদের MSB community এবং আমাদের অফিসিয়াল Youtube Channel এর সাথে যুক্ত থাকতে পারেন সেখানে প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির আপডেট সব বিষয় শেয়ার করা হয়। 

আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পরে বুঝতে পেরেছেন যে, প্রিন্ট অন ডিমান্ডএ মানুষ কোন ধরনের ভুল গুলা বেশি করে। তাই আপনি যদি সফল হতে চান, কাজ শুরু করতে চান তাহলে অবশ্যই এই ভুল গুলা এড়িয়ে চলবেন। আর যদি অলরেডি বিজনেস শুরু করে দিয়ে থাকেন তাহলে এই ভুলগুলো করে থাকলে তা সংশোধন করে ফেলুন। এখন আপনি যদি নিজে নিজে গুগল, ইউটিউব এর ফ্রি রিসোর্স দেখে নিজে থেকে সংশোধন করতে পারেন তাহলে খুবই ভাল। আর যদি মনে করেন এই বিষয়ে আপনার আরও কমপ্লিট গাইডলাইন প্রয়োজন তাহলে আমি বলবে আপনি MSB Academy-তে পাবলিশ হওয়া প্রিন্ট অন ডিমান্ড কোর্সটি করতে পারেন। তাহলে এক জাগায় সব কিছু পেয়ে যাবেন। কোর্সটি ভালভাবে কমপ্লিট করলে আশা করি এই ভুলগুলি সহজে এড়িয়ে চলতে পারবেন।

Comments

  • User Avatar
    Rabbi53
    December 28, 2023

    আমি ইউটিউব দেখে ফটোশপ বেসিক কিছু ব্যবহার পারি। ডিজাইন খুব ভাল ভাবে করতে পারি না, আমার জন্য এই সেক্টরে আশা ঠিক হবে?

Leave a Reply